Friday, May 17, 2024
দেশ

স্কুল খুলেছেন, এবার কলেজ খুলতে চান ‘পদ্মশ্রী’ ফল বিক্রেতা হরেকলা হজব্বা

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: হরেকলা হজব্বা (Harekala Hajabba) যিনি পেশায় ফল বিক্রেতা। দিনে রোজগার মাত্র ১৫০ টাকা। সেই তিনিই অদম্য ইচ্ছা শক্তির জোরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় তৈরি করেছেন। সোমবার ভারতের চতুর্থ-সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করা হলো তাঁকে। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের (President Ram Nath Kovind) তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেন। কর্ণাটকের মাঙ্গলুরুর ৬৮ বছর বয়সী হরেকলা হজব্বার এবারের ইচ্ছা একটি কলেজ তৈরি করবেন।

জানা যায়, বহু বছর আগে একজন বিদেশী পর্যটক তাঁকে ইংরেজিতে কমলার দাম জিজ্ঞেস করেছিলেন, তখন ওই ইংরেজ ব্যক্তি তাকে কি বলছেন তা বুঝতে পারেননি এবং বিব্রত বোধ করেছিলেন। কোনও ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ তাঁর ছিল না। তিনি বলেন, সেদিন আমি একটি স্কুল করার প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, আমার মতো গ্রামের ছেলে-মেয়েরা যেন ইংরেজিতে অজ্ঞ না হয়।

হরেকলা হজব্বার গ্রাম নিউপাদাপুতে বহু বছর ধরে স্কুল ছিল না। গ্রামের সব শিশু শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। গ্রামে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে ২০০০ সালে হরেকলা হজব্বা তাঁর জীবনের সমস্ত সঞ্চয় ব্যয় করে এক একর জমিতে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।

হরেকলা হজব্বা

কেন তিনি নিজের সমস্ত অর্থ ব্যয় করে স্কুল প্রতিষ্ঠা করলেন? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি কখনই শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাইনি, এবং আমি চাইনি যে গ্রামের শিশুরা একই পরিণতি ভোগ করুক। এখন স্কুলে ১৭৫ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে যেখানে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়।”

২০২০ সালের জানুয়ারিতে ঘোষণা করা হয়েছিল যে হরেকলা হজব্বা পদ্মশ্রী পুরস্কার পাবেন। তবে করোনার কারণে অনুষ্ঠান পিছিয়ে যায়। সোমবার পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হয় তাঁকে। পদ্মশ্রী সম্মানের সমস্ত টাকা স্কুলের উন্নয়নের জন্য দিতে চান তিনি। স্বপ্ন এলাকায় আরও বেশ কয়েকটি স্কুল খোলার।

রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পদ্মশ্রী পুরস্কার নিচ্ছেন হরেকলা হজব্বা

হরেকলার জন্ম কর্নাটকের মাঙ্গলুরুতে। মেঙ্গালুরু বাস ডিপোর সামনে ১৯৭৭ সাল থেকে ফল বিক্রি করে আসছেন তিনি। তাঁর স্বপ্ন এবার গ্রামে কলেজ খোলার। ইতিমধ্যেই একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির জন্য স্কুল চালুর আর্জি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে যোগাযোগও করেছেন তিনি।

হরেকলা হজব্বা জানান, বহু মানুষ তারাই স্কুলের জন্য অনুদান দেন। সেই টাকা এবং নিজের জমানো টাকা দিয়ে একটি জমি কেনার পরিকল্পনা করছেন তিনি। সেই জমিতে কলেজ তৈরি করতে চান তিনি।