সেনার দখলে মায়ানমার, গৃহবন্দি সুচি, এক বছরের জন্য দেশের দখল নিল সেনা
ইয়াঙ্গুন: ফের মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান। নির্বাচিত সরকারকে ফেলে আগামী এক বছরের জন্য দেশের দখল নিল সেনা। দেশটির ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির নেত্রী আং সান সুচিকে (Aung Sang Suu Kyi) গৃহবন্দি করেছে সেনাবাহিনী। দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্তও সেনা হেফাজতে রয়েছেন। সোমবার ভোরে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের কোথায় রাখা হয়েছে সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। সেদেশের সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত টিভি চ্যানেল মিয়াওয়াদ্দি (Myawaddy TV) এই ঘোষণা করেছে।
মায়ানমারের রাজধানী নে পি দ্য-সহ দেশের বিভিন্ন শহরে ইন্টারনেট এবং টেলিফোন পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রাস্তায় বিপুল সংখ্যক সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ইন্টারনেট এবং টেলিফোন পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার জেরে মায়ানমারের কোনও খবর বাইরে আসছে না।
মিয়াওয়াদ্দি টিভি সাফ জানিয়েছে, আগামী ১ বছর দেশের নিয়ন্ত্রণ সেনাবাহিনীর হাতে থাকবে। উল্লেখ্য, এটাই মায়ানমারের প্রথম সেনা অভ্যুত্থান নয়, এও আগে বহুবার মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান ঘটেছিল। জানা গেছে, গত কয়েক মাস ধরে দেশটির সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে টানাপড়েন চলছিল। গত নভেম্বরে নির্বাচনে বিপুল ভোটে (৪৭৬টি আসনের মধ্যে ৩৯৬টি আসন) জয়ী হয় সুচির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি। অভিযোগ, ওই ভোটে ব্যাপক জালিয়াতি করা হয়েছিল। তাই দেশের দখল নিল সেনা।
সূত্রের খবর, আং সান সুচিকে আপাতত গৃহবন্দি করা হলেও পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হতে। এদিকে, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এই ঘটনায় নিন্দায় মুখর হয়েছে। তাঁরা মায়ানমারের সেনাবাহিনীকে আইনের শাসন মেনে চলার আর্জি জানিয়েছে। আমেরিকার বাইডেন প্রশাসন ইতিমধ্যেই কড়া পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
উল্লেখ্য, মায়ানমারে গণতান্ত্রিক পথে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা দাবিতে সুচি দীর্ঘ ১৫ বছরের বেশি সময় জেলে বন্দি ছিলেন। পরে ২০১৫ সালে ভোটে ব্যাপক ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসেন সুচি। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান তিনি। যদিও ২০১৭ সালে রাখাইন থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উচ্ছেদ এবং গণহত্যা ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে ধাক্কা খায় সুচির ভাবমূর্তি।