Sunday, May 19, 2024
Latestশিক্ষাঙ্গন

কেমব্রিজে পড়ানোর ডাক পেলেন ‘সুপার ৩০’-খ্যাত আনন্দ কুমার

পাটনা: ইচ্ছে ছিল কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অঙ্ক নিয়ে পড়ার। কিন্তু অর্থাভাবে পড়তে যেতে পারেননি। তবে এবার সেই কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়ানোর জন্য ডাক পেলেন ‘সুপার ৩০’-র প্রতিষ্ঠাতা ও বিখ্যাত গণিতজ্ঞ আনন্দ কুমার। সম্প্রতি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় চিঠি পাঠিয়ে আনন্দ কুমারকে কয়েকটি ক্লাস নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

আনন্দ কুমার আগামী ২৪ নভেম্বর কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তব্য রাখবেন। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে আমন্ত্রণ পেয়ে, আনন্দ কুমার বলেন, কেমব্রিজে পড়া আমার স্বপ্ন ছিলো। সেখানে ক্লাস নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। এটা আমার পক্ষে বড় বিষয়। আমি আমার প্রয়াত পিতাকে স্মরণ করছি। যেদিন কেমব্রিজ থেকে আমার ভর্তি ডাক এসেছিল সেদিন তিনি খুব খুশি হয়েছিলেন।

আনন্দকে আমন্ত্রণ জানাতে গিয়ে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় চিঠিতে লিখেছে, আপনার ‘সুপার ৩০ প্রোগ্রাম’ ভারতে আপনার নিঃস্বার্থ কর্মের জন্য বিশ্বব্যাপী মনোযোগ অর্জন করতে গিয়ে ভারতে সামাজিক এবং শিক্ষাগত বাধা ভাঙতে সহায়তা করেছে।

কেমব্রিজে পড়ার সুযোগ পেয়েও টাকার অভাবে পড়তে যেতে পারেননি বিহারের বাসিন্দা আনন্দ কুমার। সেই দুর্ভাগ্য যাতে আর কারও জীবনে নেমে না আসে, তার জন্যই দরিদ্র পড়ুয়াদের আইআইটিতে পড়ার সুযোগ করিয়ে দেওয়ার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ‘সুপার-৩০’।

৪৬ বছর বয়সী আনন্দ কুমার গত ১৮ বছর ধরে তাঁর ‘সুপার ৩০ প্রোগ্রাম’ চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি বছর বাছাই করা ৩০ জন ছাত্রের থাকা, খাওয়া এবং কোচিংয়ের ব্যবস্থা করেন নিজ খরচায়। প্রতি বছর এখান থেকে প্রায় ৯০ শতাংশ ছাত্র আইআইটিতে পড়ার সুযোগ পান। আনন্দের এই সাফল্যের কাহিনি দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

আনন্দ কুমারের অঙ্কের থিওরি ছাপা হয়েছে আমেরিকা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়ার জার্নালে। আনন্দ কুমারের বায়োপিকে অভিনয় করেছেন হৃতিক রোশন। হৃতিক অভিনীত ‘সুপার ৩০’ ব্যাপক জনপ্রিয় হয়। আনন্দ কুমারের একটাই দাবি, এমন কত মেধা রয়েছে যারা শুধু অভাবের কারণে হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা কি পারিনা তাদের পাশে দাঁড়াতে?

আনন্দ কুমার বলেন, আজ যখন শূন্যতা বেড়ে চলেছে, তখন শিক্ষাই কেবল সেতু তৈরি করতে পারে। কাউকে সুযোগ দিন। সে ভাল করবেই। আসলে সুযোগটাই সবথেকে জরুরি। ভারতীয়রা সারা বিশ্বে নানা ক্ষেত্রে বহু আশ্চর্যজনক কাণ্ড করছেন। এবং তাঁদের কাছে এটা সন্তোষজনক যে তাঁরা সমাজকে কিছু ফিরিয়ে দিতে পারছেন। শিক্ষার চেয়ে মূল্যবান উপহার আর কিছু হতে পারে না।

আনন্দ কুমার বলেন, আমার সামান্য সুপার ৩০ প্রচেষ্টার মধ্যে দিয়ে আমি বুঝতে পেরেছি সাফল্যের হাসি কেমন করে কেবল পরিবার নয়, গোটা জাতির জন্য আশার সঞ্চার করতে পারে। এটাই পৃথিবী চায় এবং আপনার প্রচেষ্টা লক্ষ মানুষের আশাকে জাগিয়ে তুলতে পারে।