Saturday, May 4, 2024
দেশ

চা বিক্রির পয়সায় স্কুল চালান, ‘মন কি বাত’-এ কুর্ণিশ প্রধানমন্ত্রীর

কটক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বেতার অনুষ্ঠান ‘মন কি বাত’-এ ওড়িশার কটকের চা বিক্রেতা প্রকাশ রাওকে কুর্ণিশ করলেন। অবশ্য প্রকাশ রাওকে শুধু চা-বিক্রেতা বললে ভুল হবে। প্রকাশ রাও নিজের খরচে স্কুল তৈরি করে গরিব বাচ্চাদের পড়াশোনা শেখান। এছাড়া নিয়মিত হাসপাতালে গিয়ে রোগীদের দেখাশোনাও করেন। এখনও পর্যন্ত ২১৭ বার রক্তও দিয়েছেন তিনি। তবে তা সত্ত্বেও এতদিন তাঁকে কেউই সেভাবে গুরুত্ব দিতেন না। কিন্তু স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর মুখে প্রকাশ রাওয়ের প্রশংসা শোনার পর থেকেই বদলে গিয়েছে প্রকাশ রাওয়ের জীবন। লোকজন এখন প্রকাশ রাওয়ের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করা শুরু করেছে।

২৭ মে রবিবার ‘মন কি বাত’-এর ৪৪ তম পর্বে মোদী বলেন ‘উনি (রাও) ‘আশা আশ্বাসন’ নামে একটি স্কুল খুলেছেন। নিজের রোজগার থেকে ৫০ শতাংশ খরচ করেছেন বস্তির বাচ্চাদের জন্য। তাঁর স্কুলে আসা সব বাচ্চা যাতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং খাবারের সুযোগ পায়, সেটাও সুনিশ্চিত করেন তিনি।’ পাঁচ দশক ধরে চা বিক্রি করে আসা রাওকে নিয়ে মোদীজির মন্তব্য, ‘আমাদের সমাজ এবং গোটা দেশের অনুপ্রেরণা উনি।’

প্রকাশ রাও

৬০ বছর বয়সী প্রকাশ রাও জানান, ‘আমি আর্থিক সমস্যার কারণে পড়াশোনা করতে পারিনি। ছয় বছর বয়স থেকে চা বিক্রি করছি। পরবর্তী সময়ে একটি বস্তির শিশুদের পড়াশোনা শেখানো শুরু করি। আমি চাই এই শিশুরা যেন আর্থিক সমস্যার কারণে শিক্ষার ক্ষেত্রে পিছিয়ে না পড়ে। সেজন্য স্কুল, চায়ের দোকান ও হাসপাতালে গিয়ে রোগীদের দেখার জন্য নির্দিষ্ট সময় ভাগ করে নিয়েছি। এখন আমার স্কুলে ৭০ থেকে ৭৫ জন ছাত্র-ছাত্রী আছে। প্রথমে বাচ্চারা শুরুতে স্কুলে আসতে চাইত না। তবে খাবার দেওয়া শুরু হতেই ওরা আসছে।’ প্রকাশ রাও জানান, ‘দিনে ৬০০ টাকা রোজগার করি। কখনও সেটা ৭০০-৮০০ টাকা হয়ে যায়। আমি শুধু চাই এই শিশুরা ভবিষ্যতে কিছু একটা হয়ে উঠুক।’

শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গিয়েছিলেন ওড়িশায়। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে ফোন পেয়ে ১৫-২০ জন শিশুর সঙ্গে প্রকাশ পৌঁছে যান মোদীর সাথে সাক্ষাৎ করতে। তাঁকে চমকে দিয়ে মোদী বলেন, ‘আমি আপনার সঙ্গে দেখা করতেই এসেছি। আমি আপনার কথা জানি। কারও কিছু বলার প্রয়োজন নেই।’

প্রকাশ রাও জানিয়েছেন, ‘মোদীজি আমাকে তাঁর পাশে বসতে বলেন। তিনি আমার সঙ্গে ১৮ মিনিট কথা বলেন। এর পরের দিনই ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে তিনি আমার এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন। মন কি বাত অনুষ্ঠানের পর লোকজন আমার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করা শুরু করেছে।’