৩ দিনের শ্রীলঙ্কা সফরে প্রধানমন্ত্রী মোদী, নজরে প্রতিরক্ষা চুক্তি
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: শুক্রবার ৩ দিনের শ্রীলঙ্কা সফরে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। ৫ এপ্রিল তিনি লঙ্কার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন এবং ৬ এপ্রিল দেশে ফিরবেন। এই সফরকে ঘিরে দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি অনুরা কুমারা দিশানায়েকের নয়াদিল্লি সফরের পর এবার পাল্টা সৌজন্য সফরে যাচ্ছেন মোদী। দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও গভীর করতে এই সফর গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক গুরুত্ব
শ্রীলঙ্কার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের সময় ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। জ্বালানি, ঋণ ও চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ করে ভারত শ্রীলঙ্কাকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করেছিল। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এই সফরে অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার সম্ভাবনা প্রবল। সফরে ঋণ কাঠামো পুনর্গঠন, ডিজিটাল সংযোগ, স্বাস্থ্য এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সংক্রান্ত একাধিক দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে স্বাক্ষর হতে পারে।
সম্ভাব্য প্রতিরক্ষা চুক্তি
তবে এই সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হতে পারে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সম্ভাব্য চুক্তি। যদিও এখনও সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি, তবে রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এই সফরে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সংক্রান্ত কোনও ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত হতে পারে। এটি কার্যকর হলে ৩৫ বছর আগে, ১৯৮৯ সালে, শ্রীলঙ্কা থেকে ভারতীয় শান্তিরক্ষা বাহিনীর প্রত্যাহারের স্মৃতি মুছে দিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
চীনের প্রভাব রুখতে ভারতের কৌশল
গত কয়েক বছরে শ্রীলঙ্কার উপর চীনের প্রভাব ক্রমেই বেড়েছে। চীনা ঋণ, অবকাঠামো নির্মাণ এবং বন্দর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বেজিং সেখানে তাদের কৌশলগত অবস্থান মজবুত করছে। এই পরিস্থিতিতে মোদীর সফর ভারতীয় প্রভাব পুনরুদ্ধারের এক কৌশলগত প্রচেষ্টা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। শ্রীলঙ্কা, ভারত মহাসাগরের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক স্থান, যেখানে চীনা উপস্থিতিকে ভারসাম্য দিতে ভারত এই সফরকে কাজে লাগাতে চাইছে।
অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এই সফর
প্রধানমন্ত্রী মোদীর শ্রীলঙ্কা সফর শুধুমাত্র সৌজন্য সফর নয়, বরং এটি দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে ভারতের নেতৃত্ব ও প্রভাব পুনঃপ্রতিষ্ঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। অর্থনৈতিক সহায়তা থেকে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা—সবকিছু মিলিয়ে এই সফর কূটনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে। সফরের ফলাফলের দিকেই এখন তাকিয়ে রয়েছে গোটা উপমহাদেশ।