বেছে বেছে হিন্দু ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে! নববর্ষে পশ্চিমবঙ্গ সফরে আসছেন অমিত শাহ
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: চলতি এপ্রিল মাসে রাজ্য সফরে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সূত্রের খবর, আগামী ১৪ ও ১৫ এপ্রিল দু’দিনের সফরে কলকাতায় পা রাখবেন তিনি। যদিও এখনও সরকারিভাবে এই সফরের ঘোষণা হয়নি, তবে বঙ্গ বিজেপির পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে বিষয়টি ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বাংলা নববর্ষের দিন, অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল, অমিত শাহের কলকাতায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরে পুজো দিতে পারেন বলেও শোনা যাচ্ছে। সফরের দ্বিতীয় দিন, ১৫ এপ্রিল, থাকছে একাধিক কর্মসূচি ও বৈঠক। দলীয় সাংগঠনিক রূপরেখা ও রাজ্য বিজেপির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বঙ্গ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
রাজনৈতিক পটভূমি ও তাৎপর্য
এই সফরের পেছনে রয়েছে একাধিক গরম রাজনৈতিক ইস্যু। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্যের প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হয়েছে, যা রাজ্যের রাজনৈতিক আবহে বিস্তর উত্তেজনা তৈরি করেছে। যদিও এখনো পর্যন্ত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এই বিষয়ে সরাসরি কড়া বক্তব্য রাখেননি, তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অমিত শাহের সফরে এই ইস্যু বিশেষ গুরুত্ব পেতে চলেছে।
অন্যদিকে, ধর্মীয় মেরুকরণ এবং হিন্দুত্ববাদকেও জোরকদমে তুলে ধরতে চাইছে রাজ্য বিজেপি। রামনবমী পালন থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক বিভিন্ন মন্তব্যে শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষরা এই ইঙ্গিতই দিয়েছেন। রাজ্যে হিন্দু ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে বিজেপির তরফে। যদিও এখনো পর্যন্ত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এই অভিযোগে সরাসরি মুখ খোলেননি।
বঙ্গ বিজেপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতি
রাজ্য বিজেপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়েও এই সফরের প্রেক্ষিতে চলছে জোর আলোচনা। গত ১৬ মার্চ সল্টলেকে বিজেপির কোর কমিটির বৈঠকে দলীয় রণনীতি নিয়ে আলোচনা হয়। শোনা যাচ্ছে, অমিত শাহের সফরের সময় নতুন রাজ্য সভাপতির নাম ঘোষণা হতে পারে। বর্তমান সভাপতি সুকান্ত মজুমদার পদে থাকবেন, নাকি নতুন মুখ আসবে, তা নিয়েই চলছে জল্পনা।
নির্বাচন ঘিরে রূপরেখা
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজেপি রাজ্যে নিজেদের সংগঠনকে আরও চাঙ্গা করতে চাইছে। অমিত শাহের সফরে রাজ্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় আসতে পারে আগামী দিনের নির্বাচনী রণকৌশল। পয়লা বৈশাখের দিন থেকেই কি রাজ্যে বিজেপির আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়বে? রাজনৈতিক মহলে সেই প্রশ্ন এখন জোরালোভাবে ঘুরপাক খাচ্ছে।
তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া
তৃণমূল কংগ্রেস ইতিমধ্যেই বিজেপির ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়েছেন, বিভাজনের রাজনীতি তৃণমূল করে না। বিজেপির এই হিন্দুত্ববাদী প্রচারকে তিনি তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন।
সব মিলিয়ে, বাংলা নববর্ষের দিন থেকে রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন উত্তাপ বাড়ার সম্ভাবনা প্রবল।