Monday, April 29, 2024
জীবনযাপন

পুরীর জগন্নাথ মন্দির চার ধামের এক ধাম

সংগ্রাম দত্ত: বার বার পুরী যেতে কারই না মন চায়। আপনি নিশ্চয়ই আগেই পুরীর জগন্নাথ মন্দির দর্শন করেছেন। আবারও যেতে নিশ্চয়ই মন চায়। কিন্তু চিন্তায় পড়েন, বাড়ির বয়স্ক বয়স্কা সদস্যদের কথা ভেবে। পায়ে কোমরে হাঁটুতে ব্যথা যাদের তাঁরা অনেক সময়েই জগন্নাথ দর্শনের পরিশ্রমের কথা ভেবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। দীর্ঘ পথ হাঁটা সত্যিই অনেকের কাছেই কষ্টের। তাই ইচ্ছা থাকলেও অনেকের জগন্নাথ মন্দিরে পুজো দেওয়া সম্ভব হয় না। এবার আর চিন্তা নেই। আপনাদের জন্য রয়েছে খুশির খবর। এবার জগন্নাথ দর্শন অনেক সহজ হয়ে গেল। আপনাদের অসুবিধার কথা চিন্তা করেই বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষ। কি কি থাকছে সেখানে জানেন?

পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের জনপ্রিয়তা গোটা বিশ্বজোড়া।প্রত্যেক বছরই পবিত্র জগন্নাথ মন্দির দর্শন করতে লক্ষ লক্ষ ভক্তের দেখা মেলে ওড়িশার পুরীতে। দর্শনার্থীদের ভিড়ে প্রতিদিন থিকথিক করে মন্দির চত্বর। প্রাচীনকাল থেকেই এই মন্দিরটি স্বর্গ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। কথিত আছে যে এখানে ভগবান বিষ্ণু পুরুষোত্তম নীলমাধবের রূপে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। এই কারণেই এই মন্দিরকে চার-ধামের অন্যতম বলা হয়। তাই লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রতি বছর ভগবান জগন্নাথের আশীর্বাদ নিতে ওড়িশা যান। অতিরিক্ত ভিড়ের জন্য অনেকের পক্ষেই জগন্নাথদেবকে দর্শন করা সম্ভব হয় না। বয়স্কদের পক্ষে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাই এবার তাঁদের কথা বিবেচনা করে বিশেষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরী জেলা প্রশাসন।

এবার মন্দির চত্বরে চেয়ার থাকছে। রোদ বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে মাথার ওপর থাকছে শেড। যাঁদের পক্ষে গর্ভগৃহে ঢোকার জন্য দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়ানো সম্ভব নয়, তাঁরা ওই চেয়ারে বসে অপেক্ষা করতে পারবেন। এবার চেয়ারে কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিয়ে আবার হাঁটলেই হলো। গত মঙ্গলবার পুরী জেলা প্রশাসনের সঙ্গে জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষের বৈঠক ছিল। জগন্নাথ মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ এবং বিগ্রহের দর্শনের প্রক্রিয়া আরও উন্নত করা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। সেই বৈঠকেই মন্দির চত্বরে ভক্তদের জন্য বসার চেয়ার ও মাথার ওপর আচ্ছাদন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খবরটি জানিয়ে জগন্নাথ মন্দিরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে,বয়স্ক এবং অসুস্থ পুণ্যার্থীদের জন্য আমরা শেড এবং চেয়ার রাখার পরিকল্পনা করেছি। মন্দির চত্বরেই চেয়ার থাকবে।

অসুস্থ এবং বয়স্ক পুণ্যার্থীরা সেখানে বসে অপেক্ষা করতে পারবেন। পানীয় জল-সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। জনসমাগম সামাল দিতে এবং মন্দিরের চারপাশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ব্যাপক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জনসমাগম সামাল দিতে প্রশাসন জায়গায়াপুলিশ মোতায়েন করেছে।ট্র্যাফিক পুলিশ জগন্নাথ মন্দিরের দিকে যাওয়ার প্রধান রাস্তা এবং জংশনগুলিতে যানবাহন চলাচলও সীমিত করেছে। শুধু তাই নয়, পুরী প্রশাসন প্রবীণ নাগরিক এবং মন্দিরে আসা বিশেষভাবে সক্ষম ভক্তদের সহায়তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তারা মন্দির প্রাঙ্গণের ভেতরে এবং বাইরে রাজ্য স্বেচ্ছাসেবক, মেডিকেল টিম এবং অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন করেছে। যাতে সকলের সুরক্ষা ও সুস্থতা নিশ্চিত করা যায় এবং কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানো যায়। তাহলে আর চিন্তা কি !এবার পুরী যাওয়ার টিকিট কেটে ফেলুন চটপট।