Thursday, May 16, 2024
দেশ

এবার ২১ কেজি বর্জ্য দিয়ে তৈরি হচ্ছে দ্বিতীয় রাম মন্দির

সংগ্রাম দত্ত:

————-

ভাঙাচোরা লোহা দিয়ে তৈরি হচ্ছে রামমন্দির। মুসলিম কারিগরদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তৈরি হচ্ছে মন্দির। এটা কি অযোধ্যার সেই রামমন্দির নাকি অন্য কিছু! আশ্চর্য হতে হয় এই মন্দিরের তৈরির কারণ জানলে। হ্যাঁ এমন এক রামের মন্দির যা পাথর দিয়ে নয় তৈরি হচ্ছে ২১ কেজি বর্জ্য দিয়ে। রামজন্মভূমিতে নয় দেশের আরেক প্রান্তে তৈরি হয়েছে সেই মন্দির। যা দেখতে অবিকল অযোধ্যার রামমন্দিরের মতোই। 

বিহার, ওড়িশা, বাংলা নাকি রাজস্থান কোন রাজ্যে তৈরি হচ্ছে এমন অবাক করা স্থাপত্য? কোনও মূল্যবান উপকরণ নয় আর তা দিয়েই নাকি গড়ে উঠল আস্ত রামমন্দির। হ্যাঁ, স্রেফ ঝড়তিপড়তি লোহালক্কড় দিয়েই বানানো হয়েছে রামমন্দির। আর তাতে হাত লাগিয়েছেন মুসলিম কারিগরেরাও।

রামজন্মভূমিতে রামমন্দির প্রতিষ্ঠার দিকে নজর গোটা দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের। লোকসভা নির্বাচনের আগেই খুলে দেওয়া হবে মন্দিরের দরজা। অযোধ্যার রামমন্দিরের সৌন্দর্যের সঙ্গে কোনোরকম আপস করা হয়নি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসেছে বিভিন্ন উপকরণ। এমনকি সীতার জন্মভূমি বলে কথিত নেপাল থেকেও এসেছে বিশেষ শিলা। এই মন্দিরের গড়ে ওঠার গল্পও অবাক করে। মধ্যপ্রদেশে তৈরি হচ্ছে দ্বিতীয় রামমন্দিরটি। কেবল ধর্মপ্রচারের কথা ভেবেই যে এমনটা করা হয়েছে তা কিন্তু নয়। এই রামমন্দির নির্মাণের নেপথ্যে রয়েছে পরিবেশরক্ষার ভাবনা। ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট বা বর্জ্য পদার্থের ব্যবহারের সূত্রেই বর্জ্য লোহালক্কড়কে এভাবে কাজে লাগিয়েছে ইন্দোর শহরের প্রশাসন। একটু বলে রাখি জাতীয় স্তরে পরিচ্ছন্নতা নিয়ে যে সমীক্ষা চালানো হয়, সেখানে টানা ছয় বছর প্রথম সারিতেই থেকেছে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর।

এবার মন্দিরের কথায় আসি, মন্দিরটি লম্বায় ৪০ ফুট, চওড়ায় ২৭ ফুট, আর ২৪ ফুট উঁচু। আর তা গড়ে তুলতে ব্যবহার করা হয়েছে ২১ কেজি বর্জ্য পদার্থ। ইলেকট্রিক পোল, গাড়ি, এমন বিভিন্ন কিছুর ভাঙাচোরা অংশ ব্যবহার করেই মাত্র তিন মাসে ওই মন্দিরের নির্মাণ শেষ করে ফেলেছেন কারিগরেরা। এই কারিগরদের মধ্যে হিন্দুরা যেমন ছিলেন, তেমন ছিলেন মুসলিমরাও। এই মন্দিরটি যে হুবহু অযোধ্যার রামমন্দিরেরই নকল সে কথা একবাক্যেই মেনে নিচ্ছেন সকলে। 

ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের তিন মূল নীতি- রিডিউস, রিইউজ এবং রিসাইকল, অর্থাৎ বর্জ্যের পরিমাণ কমানো, বর্জ্যকে ফের ব্যবহার করা অথবা পুনর্নবীকরণ করা। আর এই তিন নীতি মেনেই এই মন্দির গড়ে তোলা হয়েছে এমনটাই জানিয়েছেন শহরের মেয়র। তাই রামমন্দিরের এই প্রতিলিপি একদিকে রামের মাহাত্ম্য প্রচার করবে, অন্যদিকে ইন্দোরের পরিচ্ছন্নতার কথাও তুলে ধরবে বলেই আশা তাঁর।