Saturday, May 18, 2024
রাজ্য​

‌‌‘‌দুর্গা–সহায়’‌ সময় ফিরতে ৫ হাজার দুঃস্থকে বস্ত্রদান রাজমিস্ত্রির

তেহট্ট: এক সময় অভাব ছিল। এখন অভাব দূর হয়েছে। তেহট্টের বেতাইয়ের গণেশ মণ্ডল তাঁর এই সুসময়ে নিজেকে ‘‌দুর্গা–সহায়’‌ বলে বিশ্বাস করেন। গ্রামে তিনি এখন জিরো থেকে হিরো। তাই দুর্গার কৃপা স্মরণ করে প্রত্যেক বছরের মতো এবারেও পুজাতেও কয়েক লাখ টাকা ব্যয়ে পুজো করছেন। পাঁচ হাজার দুঃস্থদের মধ্যে শীতবস্ত্র, শাড়ি ও ধুতি বিতরণ করেছেন।

একসময় খুব অভাবের সংসার ছিল, বাবা দিনমজুরের কাজ করতেন। কোনও রকমে একবেলা খেয়ে দিন কাটত। একচালা খড়ের ছাউনি দেওয়া ঘরেই বসবাস করতেন গণেশের পরিবার। এরই মধ্যে তাঁর বাবা বলহরি মণ্ডল মারা যান। এমন পরিস্থিতিতে মা রেখাদেবীর ছেলেমেয়ের মুখে অন্ন জোটাতে নুন আনতে পান্তা ফুরনোর মতো অবস্থা। খালি পেটে স্কুল যাবার পথে গণেশের ভাবনা ছিল কী করে তাঁদের আগামী দিনগুলি চলবে।

গণেশের কথায়, তখন বেতাই হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে পড়তাম। বাড়িতে তখন মা জ্বরে কাতর হয়ে বিছানায় পড়ে ছিলেন। সেদিন মনটা কেমন যেন হয়ে গিয়েছিল। ১৯৯১ সালে কাউকে কিছু না বলে কলকাতার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছিলাম। পথে যেতে যেতে এলাকার পরিচিত কয়েক জনের মুম্বাই যাওয়ার কথা মনে হতেই হাওড়া ষ্টেশন থেকে ট্রেনে চেপে অচেনা মুম্বাইয়ে চলে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে রাজ মিস্ত্রির কাজ করে জীবনের প্রথম রোজগার শুরু করি। তারপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি।

তারপর মা দুর্গার কৃপাতে এখন ঠিকাদারের কাজ করে নিজেকে স্বচ্ছল করে তুলতে পেরেছি। আগে যখন পেটের তাগিদে বাধ্য হয়ে পুজোর সময় বাড়ি ছেড়ে মুম্বাই থাকতাম। তখন গ্রামের বাড়িতে পুজোতে না আসতে পেরে খুব মন খারাপ করত। তাই একবার পুজোর সময় মানত করলাম মা আমাকে যদি কৃপা করো তবে প্রত্যেক বছর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তোমার পুজো দেব। শেষমেশ মা দুর্গার আশীর্বাদে গত আট বছর গ্রামের বাড়িতে নিজস্ব খরচে পুজো করি।

ছবি:‌ সংবাদ প্রতিদিন