Monday, April 29, 2024
জীবনযাপন

মানুষের রূপে গণেশ থাকেন, পিণ্ডি পরিণত হয় শিবলিঙ্গে, রহস্যে ঘেরা তামিল মন্দির

সংগ্রাম দত্ত:

————–

মানুষরূপী গণেশকে দেখছেন কোনওদিনও ভারতের এই সাধারণ মন্দিরে গেলে দেখতে পাবেন জলজ্যান্ত গণেশ।

কালো এই মূর্তির কাছে গেলে করতে হয় একটাই প্রার্থনা

স্বয়ং রামচন্দ্র এসেছিলেন এ মন্দিরে পুজো দিতে। গজরূপী গণেশের মূর্তি তো কত দেখেছেন কিন্তু মানবরূপী গণেশ কেমন দেখতে ছিলেন জানেন? কেমন ছিল তাঁর গায়ের রং মানে গণেশের মাথা কাটা পড়ার আগে ভারতের এক মন্দিরে পুজিত হন সেই মানবরূপী গণেশই এই মন্দিরে পুজো হয়। শুধু একটা কারণেই

ভগবানের মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে যা খুশি চাইতে পারবেন না আপনি। তামিলনাড়ুর তিরুভারুর জেলার আদি বিনায়ক মন্দির। বিনায়ক মানে গণেশ, তার আদি রূপ এখানে পুজিত হন। শুঁড় নেই, কুলোর মতো কানও নেই

এমনকি তাঁর চেহারাও স্থূল নয়। একেবারে সাধারণ মানুষের মতো দেখতে। কিন্তু তাঁকেই সবাই গণেশ রূপে পুজো করেন সকলে। হ্যাঁ তামিলনাড়ুর তিরুভারুরের মন্দিরে গণেশ পুজিত হন এই মূর্তিতেই।

স্বয়ং রামচন্দ্র নাকি পিতা দশরথের মৃত্যুর পর এখানে পুজো দিয়েই পিন্ডদান সেরেছিলেন। তার আগে কিছুতেই তিনি পিন্ডদান সম্পন্ন করতে পারছিলেন না। বারবার পিন্ডে চালের মন্ড পোকা হয়ে যাচ্ছিল। মহাদেবের কাছে রামচন্দ্র এর সমাধান চাইলে তিনি তাঁকে আদি বিনায়ক মন্দিরে পূজা দেওয়ার পরামর্শ দেন। শিবের আদেশে, রামচন্দ্র তাঁর পিতার আত্মার শান্তির জন্য আচার-অনুষ্ঠানের সঙ্গে এই মন্দিরে পূজার কাজ সম্পন্ন করেন।

কথিত যে, পুজোর সময়ে ধানের চারটি বল শিবলিঙ্গে রূপান্তরিত হয় এই চারটি শিবলিঙ্গ আদি বিনায়ক মন্দিরের কাছে। মুক্তেশ্বর মন্দিরে স্থাপন করা হয়েছে। এই মন্দিরে গণেশকে এমন যোগীরূপে দেখতে দূর দুরান্ত থেকে ছুটে আসেন মানুষ। মন্দিরের বিগ্রহটিও বেশ প্রাচীন

লম্বায় প্রায় ৫ফুট কালো পাথরের তৈরি মূর্তি। বিগ্রহের হাতও দুটি চোখ বন্ধ, খানিকটা যোগী রূপ প্রকাশ পায় গণেশের এই বিগ্রহে। তবে পুজোর উপকরণ বা আয়জন সাধারণ গণেশ পুজোর মতোই।

ভক্তেরা মানেন, মহাগুরু অগস্ত্য স্বয়ং প্রতি ‘সংকষ্টি চতুর্থীতে’ আদি বিনায়কের পূজা করেন। এমনও বিশ্বাস রয়েছে যে, এখানে গণেশের পূজা করলে নাকি পারিবারিক সম্পর্কে শান্তি আসে। বিনায়কের আশীর্বাদে শিশুদের বুদ্ধি তীক্ষ্ণ হয়। তবে জনশ্রুতি বলে রামচন্দ্র এই মন্দিরে বাবা কাজ সারার পর থেকে সাধারণ মানুষও পূর্বপুরুষদের শান্তির জন্য এই মন্দিরে পূজা দিতে শুরু করেন। এই কারণেই এই মন্দিরটি তিলতর্পণপুরী নামেও পরিচিত। তিলতর্পণের অর্থ পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা। পুরী কথার অর্থ শহর নদীর তীরে পূর্বপুরুষদের শান্তির জন্য পূজা করা হলেও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান হয় মন্দিরের ভিতরে। মন্দিরটি সাধারণ চেহারায় খুব সাধারণ হলেও স্থানীয়রা বলেন এই স্থানমাহাত্ম্য ও ক্ষমতা অসীম।