Monday, April 29, 2024
জীবনযাপনসম্পাদকীয়

এক পিলারের ওপর গোটা মন্দির! রহস্যে ঘেরা কেদারেশ্বর

সংগ্রাম দত্ত: কলিযুগে ধ্বংস হবে এই মন্দিরের একটা স্তম্ভ ভাঙলেই। ভারতের কেদারেশ্বরের গুহার গুপ্ত মন্দিরের তত্ত্ব জানেন? তীব্র গরমেও এর জল থাকে বরফের মতো ঠান্ডা। ভগবান শিবকে দেখতে পেলেও ছুঁতে পাওয়া বড় কঠিন। শিবলিঙ্গের মাথার ওপর বিশাল এক শিলা কিন্তু তাকে ঠেকিয়ে রেখেছে চারটে পিলার তার মধ্যে তিনটেই ভাঙা মাত্র একটাই আস্ত। এখানেই রয়েছে এই মন্দিরের আসল রহস্য। মহারাষ্ট্রের আহমদনগর জেলার মলসেজ ঘাটে প্রায় ৪,৬৭০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত হরিশচন্দ্রগড়ের প্রাচীন পার্বত্য দুর্গ। এই পবিত্র স্থানের উল্লেখ রয়েছে মৎস্যপুরাণ, অগ্নিপুরাণ, স্কন্দপুরাণের মতো প্রাচীন ধর্মগ্রন্থে আর এই গোটা জায়গাটাই হল একের পর এক রহস্যে ভরা। কেদারেশ্বর গুহার কাছে আছে হরিশচন্দ্রগড় মন্দির মন্দিরের ঠিক পূর্ব দিকে বরাবর সপ্ততীর্থ পুষ্করিণী। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এই পুকুরের জলে অসুস্থ মানুষ একবার ডুব দিলে সে সুস্থ হবেই হবে। খোলা আকাশের নীচে থাকলেও গরমকালেও এই পুকুরের জল থাকে বরফের মতো ঠান্ডা।

আসল রহস্য ও চমক রয়েছে হরিশচন্দ্রেশ্বর মন্দিরের ডান দিকের এক গুহার। এই গুহাটিতেও বরফ-ঠান্ডা জলের মাঝখানে রয়েছে পাঁচ ফুট লম্বা শিবলিঙ্গ। জল প্রায় কোমর সমান উঁচু। অতি ঠান্ডা জলের জন্য শিবলিঙ্গের কাছে যাওয়াও বেশ কঠিন। গুহার শিবলিঙ্গের ঠিক উপরে রয়েছে একটি বিশাল শিলা। চার কোণে রয়েছে চারটি স্তম্ভ। গোটা গুহা দাঁড়িয়ে একটিমাত্র স্তম্ভের উপর ভিত্তি করে। বাকি তিন স্তম্ভই নীচের দিকে ভাঙা। কীভাবে তা ভাঙল কে তা ভাঙল কেউ জানে না। স্থানীয়দের এক অদ্ভুদ বিশ্বাস রয়েছে এই পিলারের সঙ্গে জড়িয়ে তাদের দৃঢ় বিশ্বাস এই চার স্তম্ভ চারটি যুগের প্রতিনিধিত্ব করে সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর এবং কলি। তিন যুগের শেষে নিজে থেকেই ভেঙে গিয়েছে এক একটি স্তম্ভ। মনে করা হয় কলিযুগের ভার বহন করছে টিকে থাকা স্তম্ভটি। কলিযুগের ধ্বংস হলে নিজে থেকেই ভেঙে পড়বে এই স্তম্ভটিও ধ্বংস হয়ে যাবে এই পৃথিবীর।

এই গুহায় রয়েছে আরও এক আশ্চর্যের বিষয়! এই মন্দিরের চার দেওয়াল‌ কোনও ছিদ্র না থাকলেও এই দেওয়ালগুলি দিয়ে জল গুহার ভিতরে ঢুকে পড়ে কীভাবে কেউ জানে না। বর্ষাকালে তো এই গুহার কাছে যাওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়ে। গুহার সামনের রাস্তা দিয়ে জলের প্রবল স্রোত বয়ে যায়। বছরের বাকি অন্য সময় শিবেরভক্তরা যান সেখানে দর্শন করে আসেন অদ্ভুত এই মন্দিরের।