Thursday, May 2, 2024
Latestদেশ

বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনায় ভারতে সিএএ চালুর দাবি আরও জোরালো হল

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: সম্প্রতি বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে এটাই প্রথম নয়, এর আগেও বিগত বছরগুলোতে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। চলতি বছর দুর্গাপুজো মণ্ডপ, মন্দির, হিন্দুদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনায় ভারতে নাগরিকত্ব আইন চালুর দাবি আবার নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে।

বিজেপি নেতারা অনেক আগে থেকেই এই আইন লাগুর দাবি জানিয়ে আসছেন। এবার বিরোধী দলগুলোর অনেক প্রথম সারির নেতাও বলছেন নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে বাংলাদেশের নির্যাতিত হিন্দুদের সুরক্ষা ও পুনর্বাসনের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তবে তাঁরা সম্প্রতি নির্যাতিত হওয়া হিন্দুদের জন্যও ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। পাশাপাশি, তাঁরা বলছেন, ভারতের এই নাগরিকত্ব আইন বাংলাদেশ বা আফগানিস্তানের সংখ্যালঘুদের বিপদের দিনে কোনও কাজে আসেনি।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে পাশ হয়েছিল সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। এই আইনে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া হিন্দু-শিখ-খ্রীষ্টান-বৌদ্ধদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।তবে আইনটিকে মুসলিম-বিরোধী ও অসাংবিধানিক দাবি করে গোটা দেশে তীব্র বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ দেখায় বিজেপি বিরোধীরা।

কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা মিলিন্দ দেওরা বলেন, ‘সাধারণত দেখা যায় একটা বিল আইনে পরিণত হওয়ার ৬ মাসের মধ্যেই সেটির বাস্তবায়নের নিয়মকানুনগুলো চূড়ান্ত করা হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে সিএএ পাশ হওয়ার দু’বছর পরেও সেগুলো কিছুই করা হয়নি। ওদিকে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান-সহ উপমহাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হয়েই চলেছেন … তাহলে কি সিএএ শুধুই একটা রাজনৈতিক গিমিক ছিল?’

তিনদিন আগে মিলিন্দ দেওরা টুইটে লিখেছিলেন, ‘যারা এখন ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশ থেকে চলে আসতে চাইবেন, তাদেরকেও সিএএ-র আওতায় আনতে আইনটি সংশোধন করা প্রয়োজন।’

শিবসেনা দলের মুখপাত্র ও এমপি প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী টুইটে বলেছেন, ‘বাংলাদেশে দুর্গাপুজো মন্ডপ, ইসকন মন্দির ও হিন্দুদের ঘরবাড়ি আক্রান্ত হলেও ভারত সরকার তার নিন্দা করে একটি কথাও বলছে না। যে সিএএ নিয়ে এত হইচই করা হচ্ছিল, কোথায় গেল সে আইন?’

গোটা দেশে সিএএ-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সবচেয়ে সরব তৃণমূল। কিন্তু বাংলাদেশের ঘটনার পর এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও মন্তব্যই করেনি তাঁরা। তৃণমূল নেত্রী মমতা কেন বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন ও সিএএ নিয়ে এখন নীরব, প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি।

তবে গত দু’বছরে সিএএ বাস্তবায়ন করা হয়নি কেন? এ নিয়ে বিজেপিকেও অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে। দলের মুখপাত্র সঞ্জু ভার্মা বলএছেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন সিএএ বাস্তবায়নের নিয়মকানুন খুব শীঘ্রই নোটিফাই করা হবে।”

তবে প্রশ্ন উঠছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে ভারতে আসাদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু গত ১০-১২ দিনে যে সব হিন্দু পরিবার আক্রান্ত হয়েছেন তারা যদি কেউ ভিটেমাটি ছেড়ে ভারতে চলে আসতে চান, তাঁদের জন্য নাগরিকত্ব আইন কোনও কাজেই আসবে না। বিরোধী নেতারা অনেকেই আইনটির সেই দুর্বলতার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন।