Saturday, May 18, 2024
আন্তর্জাতিক

মাংস ছেড়ে শাকসবজির দিকে ঝুঁকছে চিনারা

সারা পৃথিবীতে গরু, শুয়োর আর মুরগির মাংসের সব থেকে বড় ক্রেতা চিন। সেই দেশই এ বার নিরামিষ খাবারদাবারের দিকে ঝুঁকছে। সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, গত কয়েক বছর ধরেই চিনের বিভিন্ন রেস্তরাঁয় নিরামিষ পদের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। স্বাস্থ্যমনস্ক বর্তমান প্রজন্মের মাংস-সহ হাই ক্যালোরি ডায়েট পছন্দ না। অর্গ্যানিক, নিরামিষ ও মাংসহীন ডায়েটেই ঝোঁক বেশি তাদের। একটু বয়স্ক যাঁরা, রক্তচাপ, বেশি ওজন বা হৃদ্‌রোগের মতো সমস্যা থেকে বাঁচতে, তাঁরাও নিরামিষ খাবার পছন্দ করছেন। শুধু বেজিং বা হংকং নয়, এই স্বাদবদলের হাওয়া দেশের সব শহরেই।

কয়েক বছর আগে পর্যন্ত  সিচুয়ান প্রদেশের চেংদু শহরের কোনও রেস্তোরাঁতেই নিরামিষ খাবার মিলত না। কিন্তু কিন্তু বর্তমানে শহরের অন্তত অর্ধেক রেস্তোরাঁর মেনুতেই এখন ঢুকে পড়েছে একাধিক নিরামিষ পদ। মাংস বিক্রি কমার সঙ্গে সঙ্গেই বেড়ে গিয়েছে ফল ও আনাজের ফলন, আমদানি ও বিক্রি।

মাংস বিক্রিতে চিন এখনও বিশ্বে প্রথম। কিন্তু বিক্রির পরিমাণ কমছে। ২০১৪ সালে ৪ কোটি ২৪৯ লাখ টন শুয়োরের মাংস বিক্রি হয়েছিল চিনে। ২০১৬-এ সেই পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ৪ কোটি ৮৫ লাখ টনে। অথচ এই দু’বছরে চিনের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১ কোটি ১৫ লাখ।

সাংহাইয়ের জিয়াও টং বিশ্ববিদ্যালয় শহরের বিভিন্ন রেস্তোরাঁতে একটি সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছে, নিরামিষ পদ অর্ডার দেন যারা, তাদের অধিকাংশের বয়স ২০ থেকে ২৯-এর মধ্যে। বেশির ভাগই পড়ুয়া। তবে ৬৫ বছরের বেশি যাদের বয়স, তাদেরও অনেকে নিরামিষ খেতে শুরু করেছেন, জানাচ্ছেন রেস্তোরাঁকর্মীরা।

এই পরিবর্তনের সুফল মিলছে পরিবেশেও। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, চিনের মাংস-প্রক্রিয়াকরণ কারখানাগুলো থেকে বছরে ১৫ কোটি টন কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন হত। গত কয়েক বছরে সেই পরিমাণ বেশ কিছুটা কমেছে। পরিবেশবিদরা তাই বলতে শুরু করেছেন, বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক।