খুনি, গণধর্ষণকারী টিপু সুলতানের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ‘না’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্ত হেগড়ের
নয়াদিল্লি: মহীশুরের বাঘ বা শের-ই-মহীশূর বলে খ্যাত টিপু সুলতানের জন্ম জয়ন্তী পালনে ‘না’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। ২০১৫ সাল থেকে আয়োজিত হতে থাকা টিপু জয়ন্তীর শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে এসেছেন কেন্ত্রীয় স্কিল বা কর্মীদক্ষতা মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অনন্ত কুমার হেগড়ে। টুইটারে আমন্ত্রণ দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে দেয়া পোস্টে টিপু সুলতানকে নির্মম খুনি, উন্মাদ ও গণধর্ষণকারী হিসেবে অভিহিত করেন তিনি। উত্তর কন্নড় থেকে পাঁচবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য হেগড়ে কট্টর কংগ্রেস-বিরোধী বলে পরিচিত।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্ণাটকের মুখ্যসচিব ও উত্তর কন্নড়ের ডেপুটি কমিশনারকে দেয়া চিঠিতে তিনি বলেন, আগামী ১০ নভেম্বরের টিপু সুলতানের জন্মজয়ন্তী উদযাপনে যেন তার নাম না থাকে। সেই চিঠিরই ছবি পোস্ট করে টুইটারে বলেন, আমি কর্ণাটক সরকারকে অভিহিত করেছি যেন নৃশংস খুনি, বদ্ধ, গোঁড়া ধর্মোন্মাদ, গণধর্ষণকারী বলে যাকে লোকে চেনে, এমন একজনকে মহিমান্বিত করে তোলার লজ্জার আসরে আমায় আমন্ত্রণ না জানাতে।
Conveyed #KarnatakaGovt NOT to invite me to shameful event of glorifying a person known as brutal killer, wretched fanatic & mass rapist. pic.twitter.com/CEGjegponl
— Anantkumar Hegde (@AnantkumarH) 20 October 2017
তবে সরকারি প্রটোকল অনুযায়ী এই জেলার সরকারি সব অনুষ্ঠানে তাকে আমন্ত্রণ করার কথা তাই তাকে সেখানে যাওয়ার আমন্ত্রনপত্র দেয়া হয়েছে।
কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াহ টিপু জয়ন্তী পালনের অনুষ্ঠান থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ায় সমালোচনা করেছেন হেগড়ের। কংগ্রেসের এই নেতা বলেন, সরকারের অংশ হিসেবে তার এটা বলা ঠিক হয়নি। টিপু জয়ন্তী উদযাপনের আমন্ত্রণপত্র সব কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক নেতা নেত্রীদের পাঠানো হবে, আমন্ত্রণ গ্রহণ করা না করা তাদের ব্যাপার।
প্রসঙ্গত, টিপু সুলতান ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের মহীশূর রাজ্যের শাসনকর্তা। ইংরেজদের বিরুদ্ধে তিনি বীরত্ব সহকারে যুদ্ধ করেন। তিনি তাঁর শৌর্যবীর্যের কারণে শের-ই-মহীশূর (মহীশূরের বাঘ) নামে পরিচিত ছিলেন। দক্ষিণ ভারতের মহীশূর রাজ্যের শাসক ছিলেন টিপু সুলতান৷ পিতা হায়দার আলী মহীশূর রাজ্যের সেনাপতি ছিলেন৷ শ্রীরঙ্গপত্তনম গ্রামে কাবেরী নদীর একটি ব-দ্বীপে নির্মিত একটি দূর্গ থেকে রাজ্য শাসন করতেন৷ বর্তমানে শ্রীরঙ্গপত্তনম গ্রাম দক্ষিণ ভারতের কর্ণটক রাজ্যের মান্ডিয়া জেলার অন্তর্গত৷ টিপুর এক সেনাপতি মীর সাদিক বিশ্বাসঘাতকতা করে ব্রিটিশদের সঙ্গে হাত মেলান৷ পরে তার পরিবারের মানুষজনকে ভেলোরের দূর্গে বন্দী করে রাখে ব্রিটিশ শাসকরা৷ টিপু সুলতানের ৪ জন স্ত্রী, ১৫ জন পুত্র এবং কমপক্ষে ৮ জন কন্যা সন্তান ছিল। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর সঙ্গে যুদ্ধে ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে নিহত হন তিনি।