ওয়াকফ বিল নিয়ে নীরব কেন গান্ধী পরিবার? ক্ষুব্ধ মুসলিম সংগঠনগুলো
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: সম্প্রতি সংসদের দুই কক্ষে সংশোধিত ওয়াকফ বিল পাশ হয়েছে দীর্ঘ আলোচনার পর। লোকসভায় ১৪ ঘণ্টা এবং রাজ্যসভায় ১৭ ঘণ্টা ধরে এই বিল নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়, যেখানে শাসক ও বিরোধী দুই পক্ষের বহু সাংসদ অংশ নেন। তবে বিস্ময়ের বিষয়, এত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিল নিয়ে আলোচনায় একবারও মুখ খোলেননি কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব— রাজ্যসভার সাংসদ ও কংগ্রেস সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন সনিয়া গান্ধী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী, এবং কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
বিশেষ করে, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী দলের হুইপ থাকা সত্ত্বেও লোকসভায় উপস্থিত ছিলেন না এই বিল নিয়ে আলোচনার সময়। এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা প্রশ্ন তুলছেন— এত গুরুতর ও সংবেদনশীল একটি ইস্যুতে কংগ্রেস নেতৃত্বের নীরবতা কেন?
কংগ্রেসের অন্দরে শুরু হয়েছে জল্পনা। ওয়াকফ বিল নিয়ে মোদী সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণের সুযোগ থাকলেও, গান্ধী পরিবারের সদস্যরা তা করেননি। এই নীরবতার নেপথ্যে রাজনৈতিক কৌশল রয়েছে বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের। আগামী দিনে যেসব রাজ্যে নির্বাচন রয়েছে— বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, অসম ও গুজরাট— সেখানে মুসলিম ভোটের পাশাপাশি হিন্দু ভোটও সমান গুরুত্বপূর্ণ কংগ্রেসের জন্য। ফলে, ওয়াকফ বিলের বিরোধিতা করলে কংগ্রেসকে মুসলিমপন্থী বলে চিহ্নিত করা হতে পারে— এই আশঙ্কায় হয়তো গান্ধী পরিবার সরাসরি আলোচনায় অংশ নেয়নি।
এই পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ দেশের বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন। কেরালের সবচেয়ে বড় মুসলিম সংগঠন, সমস্ত কেরালা জেম ইয়াথুল উলেমা, প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছে গান্ধী পরিবারের। সংগঠনের মুখপাত্র বলেছেন, “প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর অনুপস্থিতি এবং রাহুল গান্ধীর নীরবতা গণতন্ত্রে এক ধরনের কালো দাগ।”
আগামী সপ্তাহেই গুজরাটের আমেদাবাদে অনুষ্ঠিত হবে এআইসিসি অধিবেশন। তার আগে কংগ্রেসের অভ্যন্তরে এই বিষয়টি নিয়ে চরম অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। শীর্ষ নেতৃত্বের কেউ এখনই প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাইছেন না, কিন্তু দলীয়ভাবে এই নীরবতার প্রভাব ভোটবাক্সে পড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।