Saturday, May 4, 2024
দেশ

ভারতে লিঙ্গভিত্তিক গর্ভপাতে ৬ কোটি ৩০ লাখ শিশুকন্যাকে হত্যা

ভারতে লিঙ্গভিত্তিক গর্ভপাত ব্যাপকহারে বাড়ছে। যেখানে বাবা-মা পুত্রসন্তানকে মহামূল্যবান বিবেচনা করছেন, সেখানে কন্যাসন্তান জন্ম নেয়া একেবারে অপ্রত্যাশিত হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সরকারি এক হিসাবে দেখা যাচ্ছে, সংখ্যার হিসাবে ছেলেমেয়েদের মধ্যে মারাত্মক রকম ভারসাম্যহীনতা দেখা যাচ্ছে। প্রতি ১০০ নারী শিশুর বিপরীতে পুরুষ সন্তান হচ্ছে ১০৭টি। কিন্তু প্রাকৃতিকভাবে এ গড় হচ্ছে ১০৫-১০০টি।

২০১৭-১৮ সালের অর্থনৈতিক জরিপে দেখা গেছে, ভারতে জাতীয়ভাবে শিশুরা অপ্রত্যাশিত। ছেলেরা ঐতিহ্যগতভাবে বাবা-মায়ের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে পারেন। অন্যদিকে মেয়েদের পরিবার ছেড়ে চলে যেতে হয়। তাদের বিয়ে দেয়ার সময় যৌতুক দেয়া লাগে।

সিএনএনের এক খবরে বলা হয়, ছেলে না হওয়া পর্যন্ত একটা দম্পতি সন্তান নেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। এতে করে ভারতে দুই কোটি ১০ লাখ নারী শিশু জন্ম নিয়েছে। বাবা-মা যাদের অপ্রত্যাশিত হিসেবে দেখছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ছেলেসন্তানকে অগ্রাধিকার দেয়া ও লিঙ্গনির্ভর অস্ত্রোপচার ভারতে সম্পূর্ণ অবৈধ। তবু ভারতে কন্যাশিশু টার্গেট করে গর্ভপাতের পরিমাণ বাড়ছে। এতে ছয় কোটি ৩০ লাখেরও বেশি শিশুকন্যাকে পৃথিবীর আলো দেখার আগেই মেরে ফেলা হচ্ছে। গর্ভপাতের এই প্রবণতা এখন ভারতজুড়ে সর্বব্যাপী রূপ নিয়েছে।

হিউম্যান লাইফ ইন্টারন্যাশনালের (এইচএলআই) কর্মকর্তা মিলাগ্রেস পেরেইরা বলেন, আমি যেখানে থাকি, সেখান থেকে মাইল দুয়েক দূরে এক সুশিক্ষিত ও কর্মজীবী দম্পতি তাদের তিনটি কন্যাশিশুকে জন্মের আগেই গর্ভপাত করে নষ্ট করে দিয়েছে। তিনি বলেন, জন্মের আগেই ভারতের সরকারি হাসপাতালে শিশুর লিঙ্গ জেনে স্ক্যানিং করা হয়।

অ্যাবর্শন ফ্রি নিউ ম্যাক্সিকোর তারা শাভার বলেন, ভারতে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য মহামারীর রূপ নিয়েছে। আধুনিক পৃথিবীর প্রজনন বিদ্যায় এমন প্রবণতা আর কখনও দেখা যায়নি। চিন ও ভারতে লিঙ্গের ওপর ভিত্তি করে মানুষের মূল্য নির্ধারণ করা হয়।

হার্টবিট ইন্টারন্যাশনালের প্রধান জর-এল গোডসে বলেন, গর্ভপাত হচ্ছে- মানবজাতির ওপর খুব বিভৎস উপায়ে নির্যাতন হচ্ছে গর্ভপাত। একটি শিশু কেবল মেয়ে হওয়ায় তাকে হত্যা করা উচিত নয়। প্রতিটি নারীর সন্তান জন্ম দেয়ার অধিকার আছে। প্রতিটি মায়ের তার কন্যার সন্তানের মুখ দেখার অধিকার আছে।