Saturday, April 27, 2024
আন্তর্জাতিক

ভয়ের ছায়ায় দিন কাটছে চিনের সংখ্যালঘু মুসলিমদের

চিনের জিনজিয়াং প্রদেশের সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের দেশটির সরকারি রাজনৈতিক আশ্রয়কেন্দ্রে আটকে রাখা হচ্ছে। সংখ্যালঘু এই জনগোষ্ঠী ইসলামি জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে এমন অভিযোগ এনে হাজার হাজার উইঘুরকে আটকে রাখার খবর পাওয়া যাচ্ছে। সংখ্যালঘু প্রান্তিক এই সম্প্রদায়ের লোকজন গত কয়েক বছরে ব্যাপকহারে নিখোঁজ হয়েছেন। চিন সরকার বলছে, মৌলবাদী ইসলামি জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছেন উইঘুর মুসলিমরা। তবে উইঘুরদের দাবি, সরকারি আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা তাদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে। তুর্কিক ভাষাভাষি এক কোটি উইঘুরের জিনজিয়াং প্রদেশ এখন কার্যত পুলিশি রাজ্যে পরিণত হয়েছে। প্রতি ক্ষণেই সেখানে টহল পুলিশ, সাঁজোয়া যান ও ২৪ ঘণ্টার নজরদারি সামগ্রী ব্যবহার করে তাদের সবকিছুই পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

২০১৩-১৪ সালে কয়েক দফা সিরিজ হামলার জেরে বিচ্ছিন্নতাবাদী উইঘুরদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান শুরু করে দেশটির সরকার। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, সন্ত্রাসবাদের মূলোৎপাটনের লক্ষ্যেই এই কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে সেখানে। রমজান মাসে রোযা রাখা নিষিদ্ধ করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি। এছাড়া জিনজিয়াংয়ের মসজিদগুলোতে আযান, লম্বা দাড়ি রাখা, ইসলামিক স্কার্ফ পড়া ও তুর্কিক ভাষা ব্যবহারেও সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও রেডিও অনুষ্ঠান না শুনলে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হয় উইঘুর মুসলিমদের। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে উইঘুরদের তথ্য-উপাত্ত, ত্রিমাত্রিক পোর্টেইট, কণ্ঠ সনাক্ত, ডিএনএ ও আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করছে সরকার।

সরকার বলছে, জিনজিয়াংয়ে অর্থনৈতিক বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রেও তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। মূলত উইঘুর মুসলিমদের চিনের মূল ধারায় নিয়ে আসতেই এসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

তবে চিনের সংখ্যালঘু এই মুসলিমরা আফগানিস্তানে জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবান, সিরিয়া ও ইরাকে ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিচ্ছে। বিভিন্ন নথিতে তাদের জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার তথ্য এসেছে। দেশে ইসলামি চরমপন্থার বিরুদ্ধে কট্টর অবস্থান নিলেও সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের লালন-পালনের অভিযোগ উঠা প্রতিবেশি রাষ্ট্র পাকিস্তানের সঙ্গে বেইজিংয়ের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ।