Sunday, May 18, 2025
রাজ্য​

জীবনকৃষ্ণ নিজে পেশায় হাইস্কুলের শিক্ষক ছিলেন, বাড়ির ১০০ মিটারের মধ্যে চাকরি করেন স্ত্রী, শ্যালকও শিক্ষক

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়েছে জীবনকৃষ্ণ সাহার। শুক্রবার থেকে তার বাড়িতে তল্লাশি শুরু করে সিবিআই। বাড়ির অদূরে ঝোপের থেকে উদ্ধার হয়েছে ৬টি ব্যাগ। তাতে মিলেছে ১টি হার্ডডিস্ক, পেনড্রাইভ ও একাধিক নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। ২ বস্তা নথি উদ্ধার করা হয়েছে। ৩৪০০ চাকরিপ্রার্থীর তালিকা উদ্ধার করা হয়েছে তার বাড়ি থেকে। উদ্ধার করা হয়েছে ছবি সহ অ্যাডমিট কার্ডের জেরক্স ও শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণের নকল কপি। সিবিআই হানার পরে পাচিল টপকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন জীবনকৃষ্ণ। প্রমাণ লোপাট করতে পুকুরে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন ২টি মোবাইল ফোন।

চাকরির জন্য কত টাকা নেওয়া হয়েছে তারও তথ্য নাগালে এসেছে সিবিআইয়ের। ২৫জনের তদন্তকারী সিবিআইয়ের দল এই দীর্ঘ প্রায় ৪০ ঘন্টার বেশি সময় ধরে জীবনকৃষ্ণকে ম্যারাথন জেরা করছেন।

প্রমাণ লোপাট করতে দুটি মোবাইল ফোন পুকুরে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন জীবনকৃষ্ণ। ৩২ ঘণ্টার চেষ্টা পরে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। আরেকটির খোঁজ চলছে।

কে এই জীবন কৃষ্ণ সাহা? জানা গেছে, জীবন কৃষ্ণ সাহা পেশায় একজন শিক্ষক। ছাত্র জীবন থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে জড়িত। ২০০৪ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা দিয়ে পথচলা। বাবা বিশ্বনাথ সাহার বীরভূম জেলার সাঁইথিয়াতে তেল মিল ও আলুর কোল ষ্টোরেজ আছে। পাশাপাশি রয়েছে রেশন ডিলারের ব্যবসা।

২০১৩ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাকরি ছেড়ে বীরভূম জেলার নানুরের দেবগ্রাম হাইস্কুলের শিক্ষকতা শুরু করেন। পরে ট্রান্সফার নিয়ে ২০২১ সালে কুন্ডল হাইস্কুলে যোগদান করছিলেন।

অনুব্রত মন্ডলের অনুগত জীবনকৃষ্ণ সাহা ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের বিজেপি প্রার্থী অমিয় দাসকে ২৭৫৩ ভোটে পরাজিত করে তৃণমূলের বিধায়ক হন জীবন কৃষ্ণ সাহা। এরপরেই স্কুলের চাকরি ছেড়ে দেন।

২০১৩ সালে রঘুনাথগঞ্জের বাসিন্দা স্ত্রী টগর সাহাকে বিয়ে করেন জীবনকৃষ্ণ। বিয়ের পরেই ২০১৭ সালে স্ত্রীর চাকরি পান। বাড়ির কাছেই ১০০ মিটারের মধ্যে আন্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, অভিযোগ জীবনকৃষ্ণ প্রভাব খাটিয়েই এটা করেছেন। তার শ্যালক নিতাই সাহাও প্রাথমিকের শিক্ষক।

সিবিআই সূত্রে খবর, জীবনকৃষ্ণের হিসেব বহির্ভূত বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির পাওয়া গিয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত একাধিক এজেন্টের সঙ্গে যোগসাজশ মিলেছে। সবটাই খতিয়ে দেখছেন সিবিআই আধিকারিকরা।