রোজা চলাকালীন মহিলাদের ঘরে থাকার ফতোয়া জারি বাংলাদেশে
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: বাংলাদেশে রমজান মাস শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে কট্টরপন্থী মুরুব্বিদের পক্ষ থেকে কিছু ফতোয়া জারি করা হয়েছে। এই ঘটনায় সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। এই ফতোয়াগুলোর মধ্যে মহিলাদের রোজার সময় মহিলাদের ঘরে থাকা, একান্তই দরকার হলে মুখ ঢেকে বাইরে যাওয়া এবং রোজার সময় দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ।
মহিলাদের বাইরে বের হওয়া নিষেধাজ্ঞা:
কট্টরপন্থী মুরুব্বিদের দাবি, রমজান মাসে মহিলারা বাড়ির বাইরে বের হলে পুরুষদের চোখের ‘গুনাহ’ হবে। তাদের মতে, মহিলারা যদি বাইরে বের হতে চান, তাহলে মুখ ঢেকে বের হতে হবে। এই ধরনের ফতোয়া সমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেকেই মনে করেন, এ ধরনের নির্দেশনা মহিলাদের স্বাধীনতা ও অধিকারের পরিপন্থী।
দোকান বন্ধ রাখার ফতোয়া:
শিবচর এলাকায় কট্টরপন্থী মুরুব্বিরা মাইকিং করে ঘোষণা করেছেন যে, রমজানের সময় দিনের বেলা কোনো দোকান খোলা যাবে না। কোনো চা-এর দোকানে আড্ডা মারা বা চা খাওয়া যাবে না। যদি কেউ এই আদেশ ভঙ্গ করে, তাহলে তাদের দোকান এক মাসের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হবে। এই ধরনের কঠোর নির্দেশনা ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। তারা মনে করেন, এটি তাদের জীবিকায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া:
এই ফতোয়াগুলো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। কেউ কেউ এই ধরনের নির্দেশনাকে সমর্থন জানালেও, অনেকেই এর বিরোধিতা করছেন। তাদের মতে, রোজা মানে নিজেকে সংযত রাখা। খাবারের দোকান খোলা থাকলে রোজাদারের কোনো সমস্যা হওয়া উচিত নয়। বাংলাদেশের অভিনেতা সাইমন সাদিক তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেছেন, “রোজা মানে নিজেকে সংযত রাখা। সব সুস্বাদু খাবার সামনে থাকলেও ইফতারের জন্য অপেক্ষা করা। সেখানে খাবারের দোকান খোলা থাকলে আমার কি? তাহলে তো ঘরে যে রান্না হচ্ছে, মাগরিব পর্যন্ত তাও বন্ধ রাখতে হবে! আসুন ইসলামের পবিত্রতা রক্ষা করি।”
রমজান মাসে সংযম ও আত্মশুদ্ধির গুরুত্ব অপরিসীম। তবে, ফতোয়ার নামে মহিলাদের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন করা এবং ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি কী দিনে দিনে আফগানিস্তানের মতো হতে চলেছে?