‘স্যানফে’ ব্যবহার করে মহিলারা দাঁড়িয়ে মূত্রত্যাগ করতে পারছেন যে পদ্ধতিতে
নয়াদিল্লি: সোমবার আন্তর্জাতিক টয়লেট দিবসে ভারতে চালু করা হয়েছে অভিনব এক প্রোডাক্ট, যেটি উদ্ভাবন করেছেন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ দিল্লি আইআইটির দুই ছাত্র, অর্চিত আগরওয়াল ও হ্যারি শেহরাওয়াত। প্রোডাক্টটির নাম দেয়া হয়েছে ‘স্যানফে’, মানে স্যানিটেশন ফর ফিমেল। যার একটির দাম দশ টাকারও কম। রাস্তাঘাটে নোংরা শৌচাগারেও এই সস্তা, সহজ পদ্ধতিটাই মেয়েদের দাঁড়িয়ে মূত্রত্যাগে বিরাট সাহায্য করবে বলে বলা হচ্ছে।
দেশের সেরা চিকিৎসা গবেষণা প্রতিষ্ঠান এইমস-ও এটিকে পরীক্ষা করে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ বলে রায় দিয়েছে। জনস্বাস্থ্য খাতের গবেষকরাও বলছেন, স্যানফে জনপ্রিয়তা পেলে ভারতে রাস্তাঘাটে মেয়েদের শৌচাগার ব্যবহারের অভ্যাসটাই আমূল বদলে যেতে পারে।
অর্চিত আগরওয়ালের বলেছেন, ‘স্যানফে’ ব্যবহার করা খুব সহজ। আসলে মেয়েদের মূত্রত্যাগ করার দরকার হলেই যে টয়লেট সিটের ওপর বসতে হয়, সেই প্রয়োজনটাই দূর করে দেবে এটা! অর্চিত বলেন, দেশের পাবলিক টয়লেটগুলোর পরিচ্ছন্নতার যে অবস্থা তাতে বেশির ভাগ মহিলা সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন না। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাই বলছে, প্রতি দুজনের মধ্যে একজন মহিলা মূত্রনালীর সংক্রমণে আক্রান্ত হন। তাই শৌচাগারের কোনও অংশ স্পর্শ না-করেই যাতে মহিলারা সহজে মূত্রত্যাগ করতে পারেন, তার জন্য এই ‘স্ট্যান্ড অ্যান্ড পি’ (দাঁড়াও ও প্রস্রাব করো) ডিভাইসটা নকশা করা হয়েছে।
Presenting your product is this simple now! As we did for Sanfe, it is a Stand and Pee device for women. Check out the video and get in touch with us if you need similar kind of video to promote your product and services. Email- info@flashyvideo.com W- https://t.co/5WLYw4UVNH pic.twitter.com/VfNZWLTm0A
— FlashyVideo (@FlashyVideo) 1 November 2018
অর্চিত বলেন, যখনই তাঁদের শৌচাগার ব্যবহারের দরকার পড়বে, জিনিসটা খুলে নিয়ে মহিলারা দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থাতেই তাঁদের ফ্লো এরিয়ায় ঠিকমতো বসিয়ে নেবেন। তারপর প্রসাব করে জিনিসটা ছুঁড়ে ফেলে দিলেই, ব্যাস! টয়লেটের কোনও অংশ তাঁদের টাচ করার দরকারই হবে না!
দিল্লি আইআইটি-র অধ্যাপক শ্রীনিবাসন ভেঙ্কটরামন বলেন, ‘স্যানফে’ তৈরি হয়েছে পুরোপুরি বায়োডিগ্রেডেবেল উপাদান দিয়ে। দিল্লির কলেজছাত্রী রিমা যেমন বলছেন, এখন জিমে গেলে আমি সব সময় সঙ্গে স্যানফে রাখছি। এতে সুবিধাটা হল ওয়াশরুমে গেলে আমার ব্যাক্টেরিয়াল সংক্রমণের ভয় থাকছে না। তার চেয়েও ভালো জিনিস হল, বারবার টয়লেট সিটটা মুছে নেওয়ার কষ্টও করতে হচ্ছে না।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ পত্রলেখা চট্টোপাধ্যায় বলেন, বিশেষ করে যে নারীদের রাস্তাঘাটে প্রচুর সফর করতে হয় – হাইওয়ে, এয়ারপোর্ট, শপিং মল-সহ নানা জায়গায় বারবার টয়লেট ব্যবহার করার দরকার পড়ে, তাদের মধ্যে তো এটা জনপ্রিয় হতে বাধ্য। তিনি বলেন, ভারতে এই মহিলারা অনেকেই বহুক্ষণ ধরে প্রস্রাব চেপে রাখতে বাধ্য হন – কিংবা তাঁদের পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করতে হয় সেমি-স্কোয়াট পজিশনে। এতে কিডনিতে স্টোন তৈরি হয়, ব্লাডার মাসল দুর্বল হয়ে পড়ে। আশা করা যায় এই ধরনের একটা ডিভাইস সেই সমস্যাটা দূর করতে পারবে।