Monday, April 29, 2024
দেশ

দেশে নিজস্ব মতবাদ তৈরি করতে চান রাহুল

নয়াদিল্লি: গোটা বিশ্বে চিন (সমাজতন্ত্র) এবং যুক্তরাষ্ট্রের (পুঁজিতন্ত্র) এই দুটি মতবাদ চালু আছে উল্লেখ করে রাহুল গান্ধী বলেছেন, তিনি চান আগামী ১০ বছরের মধ্যে ভারতের নিজস্ব মতবাদ তৈরি হোক। যার ভিত্তি হবে শান্তি, ভ্রাতৃত্ব ও অহিংসা।

দেশের রাজনীতিতে তাকে নিয়ে বিতর্ক কম নয়। গান্ধী পরিবারের এ সদস্যকে ‘অপরিপক্ক’, ‘অপরিণত’, ‘পার্ট টাইমার’ বলতেও কুণ্ঠাবোধ করেননি সমালোচকরা। তবে আজকের প্রেক্ষাপট আলাদা। দাদী ও বাবার রক্ত মাড়িয়ে রাজনীতিতে আসা সেই কিশোর এখন পরিণত রাজনীতিক। ছেলে রাহুলের কাঁধে ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের ভার তুলে দিয়েছেন মা সোনিয়া গান্ধী। রাহুলের হাত ধরে গান্ধী-নেহেরুর সময়কার স্বর্ণযুগ ফিরে আসবে এমন স্বপ্ন দেখছেন দলটির নেতারা। তবে রাহুল কি পারবেন স্বর্ণযুগ ফেরাতে?

ভারতীয় রাজনীতিতে রাহুলের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছিল তথাকথিত অভিজ্ঞ মহল। বিশেষ করে গত নির্বাচনে বিজেপির কাছে দলের ভরাডুবিতে রাহুলের রাজনৈতিক দুরদর্শিতা ও পরিপক্কতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। লোকসভা নির্বাচনের পর বেশ কয়েকটি রাজ্যের নির্বাচনে বিজেপির জয়ে রীতিমতো কোনঠাসা হয়ে পড়েছিলেন রাহুল। দলের মধ্য থেকেই অনেকে দাবি তুলেছিলেন, রাহুলকে দিয়ে কংগ্রেস টিকবে না, তারা প্রিয়াঙ্কাকে রাজনীতির দৃশ্যপটে দেখার দাবি তোলে।

দায়িত্ব পাওয়ার পর কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ যে তার হাতের তালুতেই, তা প্রমাণ করতে উঠেপড়ে লেগেছেন রাহুল। দু`দিন আগেই দিল্লিতে শেষ হলো জাতীয় কংগ্রেসের প্ল্যানারি অধিবেশন। কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে প্রথমবার এমন অধিবেশনে হাজির ছিলেন রাহুল। সেখান থেকেই সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। সব বিরোধী দলকে নিয়ে ইঙ্গিত দিলেন তৃতীয় ইউপিএ জোট গড়ার। যার নেতৃত্বে থাকবেন রাহুল।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাতে আলাদা কোনো জোট গড়ে না বসেন, সেজন্য মমতার সঙ্গেও কথা বলতে চান রাহুল। তাকে নিয়ে বিকল্প কোনো ফ্রন্টও গড়তে চান তিনি। স্বভাতবই রাহুলকে নিয়ে নিছক কৌতুকের পথ ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হচ্ছে মোদীর দল বিজেপিকে।

এবার কংগ্রেসের অধিবেশনের বিশাল মঞ্চ ছিল ফাঁকা। শুধু বক্তা আছেন, কোনো নেতা নেই। রাহুল সেই মঞ্চ দেখিয়ে বললেন, ‘অন্যদের সভা দেখুন। কোনো বৈঠকে এমন খালি মঞ্চ দেখতে পাবেন না। ভারতের যুবসমাজ, এই মঞ্চ আপনাদের জন্যই ফাঁকা রেখেছি। দেশকে যদি বদলাতে হয়, তাহলে সবাইকে দলে আনতে হবে। আপনারাই বদলাতে পারেন। যাদের মেধা আছে, মনে ভারতের জন্য আগুন জ্বলছে, তাদের এই মঞ্চে আনব। যেভাবে ১৯৭০-৮০ সাল আগের কংগ্রেস ছিল জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গান্ধী, সর্দার প্যাটেল, আজাদ, জগজীবন রামদের। তাদের মধ্যে যে কেউ দেশ চালাতে পারতেন। ওটাই আমার স্বপ্ন, ওই দিনের মতো কংগ্রেস দলকে দেখতে চাই।

একটি স্বপ্নের কথা বলেছেন রাহুল। তা হলো, গোটা বিশ্বে চিন এবং যুক্তরাষ্ট্রের দুটি মতবাদ চালু আছে। তিনি চান আগামী ১০ বছরের মধ্যে ভারতের নিজস্ব মতবাদ তৈরি হোক। তা হবে শান্তি, ভ্রাতৃত্ব ও অহিংসার মতবাদ।