বিধানসভার পথে পান্তা খেয়ে প্রচারে বের হওয়া চন্দনা বাউরি
বাঁকুড়া: জীবনকে বদলাতে হলে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। বিনা পরিশ্রমে কেউই জীবনে ভালো কিছু অর্জন করতে পারে না। আর সাফল্যের যে দারিদ্রতা কোনও বাধা নয় সেটাই প্রমাণ করে দেখালেন চন্দনা বাউরি। ভাঙাচোড়া একটি ঘরে দুই সন্তান, স্বামী এবং শাশুড়িকে নিয়ে তাঁর সংসার। নুন আনতে পান্তা ফুরিয়ে যায় তাঁর সংসারে। সেই তিনিই ভোটে জিতে বিধানসভার পথে।
বিজেপির তরফে টিকিট পাওয়ার পর চন্দনা বাউরি বলেছিলেন, বিজেপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগে আমার বিশ্বাস ছিল না যে, আমার মতো একজন মহিলা টিকিট পেতে পারে। অনেকেই আমাকে অনলাইনে আবেদন করতে বলেছিলেন। সেই মতো আবেদন করেছিলাম আমি। কিন্তু আমার মতো একজন মহিলাও যে টিকিট পেতে পারে এটা বিশ্বাস করতে পারিনি। চন্দনা বাউরির শিক্ষাগত যোগ্যতা তিনি মাধ্যমিক পাশ। ২০০৮ সালে মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি।
বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি আশানুরূপ ফল করতে পারেনি। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছেন চন্দনা বাউরি। শালতোড়া বিধানসভায় তৃণমূল প্রার্থী সন্তোষকুমার মন্ডলকে ৪১৪৫ ভোটে পরাজিত করেছেন তিনি। চন্দনার স্বামী রাজমিস্ত্রি, আর চন্দনা নিজে স্বামীর সঙ্গে জোগাড়ির কাজ করেন। তাঁদের বাড়িতে নেই শৌচাগার। ভাঙাচোড়া একটি কুঁড়েঘরেই বসবাস। অভাব নিত্যসঙ্গী। সম্পত্তি বলতে রয়েছে ৩টে গরু ও ৩টে ছাগল।
প্রচার পর্বে বাচ্চা দুটোকে শাশুড়ি কাছে রেখে সাত সকালে পান্তা খেয়ে বেরিয়ে পড়তেন চন্দনা। সাথে তাঁর স্বামী। সেলিব্রেটি না হয়েও শুধুমাত্র নিজের কঠোর পরিশ্রমের দ্বারা শিরোনামে উঠে আসেন তিনি। বাঁকুড়ায় প্রচারে এসে জনসভায় দাঁড়িয়ে তাঁর নাম নেন স্বয়ং দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী দিনে বাংলাকে স্বপ্ন দেখাবে এই চন্দনা বাউরিরাই।
চন্দনা বাউরি প্রমাণ করে দেখিয়েছেন সাফল্য পেতে পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই। প্রতিবন্ধকতার পাহাড় ডিঙিয়েই সাফল্যের সিঁড়িতে পৌঁছতে হয়। ক্ষুধা, দুঃখ-কষ্ট, অভাব-দারিদ্রতা সাফল্যের পথে কোনও বাধা হতে পারে না।
Published by: Somoresh Sarkar

গুরুদাস কলেজ থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতক এরপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। ডিজিটাল সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত দীর্ঘ ৫ বছর ধরে।