Sunday, May 18, 2025
Latestরাজ্য​

‘ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করছে তৃণমূল’, শীতলকুচিতে ভোটার তালিকায় ৫ বাংলাদেশি নাগরিকের নাম

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: কোচবিহারের শীতলকুচি বিধানসভার বড় কইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের নলগ্রামে ভোটার তালিকায় বাংলাদেশি নাগরিকদের নাম থাকার অভিযোগ উঠেছে। বিজেপির দাবি, ২০১৫ সালে ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময়ের সময় এরা বাংলাদেশে চলে গেলেও ভোটার তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়নি। ফলে তারা এখনো ভারতের ভোটার তালিকায় রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক চরমে উঠেছে।

বিজেপির অভিযোগ, নলগ্রামে থাকা মাহাবুল হোসেন, সফিকুলসহ আরও পাঁচজন বাংলাদেশে পাড়ি জমালেও ভোটার তালিকা থেকে তাদের নাম কাটা হয়নি। বিজেপি বিধায়ক বরেণচন্দ্র মণ্ডল অভিযোগ করেন, “বাংলাদেশিদের নাম ভারতের ভোটার তালিকায় কীভাবে উঠল, তার জবাব বিডিওকে দিতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেস ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করতে এদের নাম ভোটার তালিকায় রেখে দিয়েছে।”

তবে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এক পঞ্চায়েত সদস্য জানান, “নতুন করে কারও নাম তালিকায় তোলা হয়নি। ছিটমহল বিনিময়ের পর তাদের নাম কাটা হয়নি, তবে তারা কেউ ভোট দেন না। ইতিমধ্যেই বিডিওর কাছে আবেদন করা হয়েছে যাতে দ্রুত তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।”

ছিটমহল বিনিময়ের প্রেক্ষাপট

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় চুক্তি সম্পন্ন হয় ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর। এর ফলে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হওয়া ছিটমহলগুলির ৩৮,৫২১ জন বাসিন্দার মধ্যে মাত্র ৯৮৯ জন বাংলাদেশি নাগরিকত্ব বজায় রাখতে চেয়েছিলেন। অন্যদিকে, বাংলাদেশে চলে যাওয়া ভারতের ছিটমহলগুলির ১৪,৮৬৩ জন বাসিন্দার প্রত্যেকেই ভারতের নাগরিকত্ব বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নেন।

প্রশাসনের ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ

এ ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। স্থানীয় বিডিওর দফতর থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। নামগুলি তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আনুষ্ঠানিক সুপারিশ পাঠানোর কথাও বলা হয়েছে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, শীতলকুচিতে এ ধরনের ঘটনা সামনে আসায় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধতে পারে। পাশাপাশি, আসন্ন নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা সংক্রান্ত স্বচ্ছতা বজায় রাখার দাবি তুলেছে বিরোধীরা।