Tuesday, March 25, 2025
Latestকলকাতা

পড়ুয়া, অধ্যাপকদের নিরাপত্তায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের 

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: কলকাতা হাইকোর্টে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক অশান্তির ঘটনায় জোড়া মামলা দায়ের হয়েছে। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার অনুমতির আবেদন করা হলে আদালত তা মঞ্জুর করেছে। মামলাগুলির মূল লক্ষ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে নিরাপত্তা জোরদার করা এবং শনিবারের ঘটনার সময় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা।

নিরাপত্তার দাবি আদালতে

শনিবারের ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। মামলাকারীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর পিকেট মোতায়েন করা হোক। তারা অভিযোগ করেছেন যে রাজ্য পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা নেয়নি এবং কার্যত প্রশাসনিক ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ছাত্রছাত্রী, অধ্যাপক এবং শিক্ষাকর্মীদের নিরাপত্তা রক্ষার্থে আদালতের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মামলাকারীরা মনে করছেন।

পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

একই সঙ্গে, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে পৃথক একটি মামলা দায়ের হয়েছে। সেখানে পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ এবং অপদার্থতার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলাকারীদের মতে, পুলিশের কার্যকলাপ প্রশ্নবিদ্ধ এবং তারা সময়মতো ব্যবস্থা নেয়নি, যার ফলে পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটে।

শিক্ষামন্ত্রীর ওপর হামলা 

তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠনের একটি বৈঠককে কেন্দ্র করে শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ওই সভায় যোগ দিতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পৌঁছালে বামপন্থী ও অতিবামপন্থী ছাত্ররা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ছাত্র সংসদ নির্বাচন দ্রুত করানোর দাবিতে তারা আগেই আন্দোলনে নেমেছিলেন।

বিক্ষোভ ক্রমশ তীব্র হয়ে ওঠে এবং শিক্ষামন্ত্রীর কনভয়ের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। এমনকি শিক্ষামন্ত্রীকে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ি ছাত্রদের চাপা দিয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করে, ফলে দুই ছাত্র আহত হন।

পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে

এই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ শিক্ষা পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। আদালতে দায়ের হওয়া মামলাগুলির ভিত্তিতে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা এখন দেখার বিষয়। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি গৃহীত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামোতে বড় পরিবর্তন আসতে পারে। তবে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ওঠা প্রশ্নের তদন্ত হলে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

ক্যাম্পাসে নেই সিসিটিভি ক্যামেরা 

এই অশান্তির পর শিক্ষার্থীদের একাংশ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা বললেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ পড়ুয়াদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ক্যাম্পাসের ভিতরে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো নিয়ে একাধিকবার আপত্তি জানিয়েছে বাম-অতিবামরা। তাদের দাবি, ক্যাম্পাসে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হলে তাদের প্রাইভেসি নষ্ট হবে। এখন আদালতের রায় কী হয়, তার ওপর নির্ভর করবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক ভবিষ্যৎ।