‘হয় বন্দিদের ছাড়ো, না হলে মরো’, হামাসকে চরম হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের গোপন আলোচনার খবর চাউর হতেই আন্তর্জাতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল হামাসের হাতে বন্দি থাকা মার্কিন নাগরিকদের মুক্তি। কিন্তু এবার আর কূটনৈতিক পথে নয়, সরাসরি কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য— “হয় বন্দিদের ছেড়ে দাও, না হলে ধ্বংস হও।” তিনি আরও জানান, বন্দিদের দ্রুত মুক্তি না দিলে গাজায় ভয়াবহ সামরিক অভিযান চালানো হবে।
গাজায় যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি
এই মুহূর্তে গাজায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি চলছে, যার ফলে হামাসের বন্দিশিবির থেকে ধাপে ধাপে মুক্তি পাচ্ছেন ইজরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকরা। এর বিনিময়ে ইজরায়েলও তাদের কারাগারে বন্দি কিছু ফিলিস্তিনিকে ছেড়ে দিচ্ছে। তবে হামাসের হাতে থাকা মার্কিন নাগরিকদের মুক্তি নিয়ে স্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এর মধ্যেই ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,
“আর কোনো দেরি নয়। এখনই সমস্ত বন্দিদের ছেড়ে দাও। যাদের তোমরা হত্যা করেছ, তাদের মৃতদেহও ফেরত দাও। না হলে ফল ভোগের জন্য প্রস্তুত হও। এবার সবকিছু তোমাদের উপর নির্ভর করছে। এটাই তোমাদের শেষ সুযোগ। এখনই গাজা ছেড়ে চলে যাও।”
ট্রাম্পের এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, যদি হামাস বন্দিদের ছেড়ে না দেয়, তবে গাজায় সামরিক অভিযান চালানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
গোপন আলোচনায় প্রথমবার আমেরিকা-হামাস?
গোটা বিষয়টি আরও বিতর্কিত হয়েছে কারণ, আমেরিকা আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৯৭ সালেই হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। এর আগে কখনও যুক্তরাষ্ট্র হামাসের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসেনি। তবে সম্প্রতি Axios-এর এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, দোহায় মার্কিন প্রতিনিধি অ্যাডাম বোয়েলার হামাস নেতৃত্বের সঙ্গে পণবন্দি সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলেছেন। যদিও এই আলোচনা নিয়ে ইজরায়েল পুরোপুরি অন্ধকারে ছিল বলে সূত্রের খবর।
ফের যুদ্ধবিরতির অবসান হবে?
দীর্ঘ ১৫ মাসের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর ইজরায়েল ও হামাস সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল। তবে বন্দিমুক্তি নিয়ে চূড়ান্ত ঐক্যমত্য না হওয়ায় উত্তেজনা আবার চরমে উঠেছে। ইজরায়েল প্রথম ধাপে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল, তবে শর্ত ছিল— প্রথম দিনেই হামাসকে অর্ধেক বন্দিকে মুক্তি দিতে হবে। এরপরই স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা করা হবে। কিন্তু এই শর্তে রাজি হয়নি হামাস।
এই পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রশাসনের নতুন অবস্থান ও ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি যে গাজার পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে, তা বলাই বাহুল্য। যদি হামাস মার্কিন বন্দিদের মুক্তি না দেয়, তবে ওয়াশিংটন ও তেল আভিভ একযোগে সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে। ফলে যুদ্ধবিরতি আর কতদিন টিকবে, তা এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।