Monday, November 17, 2025
Latestরাজ্য​

এবার টোটো চালাতে গেলে রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক, রেজিস্ট্রেশন ফি ১০০০ টাকা, মাসে গুনতে হবে ১০০ টাকা

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: রাজ্যজুড়ে টোটোচালকদের জন্য নতুন নিয়ম চালু করল পরিবহণ দফতর। এখন থেকে টোটো চালাতে হলে বাধ্যতামূলকভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে সরকারের দেওয়া অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে। রেজিস্ট্রেশনের জন্য দিতে হবে ১,০০০ টাকা ফি, এবং প্রতি মাসে আরও ১০০ টাকা করে দিতে হবে। তবে এই সিদ্ধান্ত ঘিরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক।

মঙ্গলবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী সরকারের এই সিদ্ধান্তের কড়া বিরোধিতা করে বলেন, “টোটোচালকরা এক টাকাও দেবেন না। আমরা বিজেপি তাঁদের পাশে আছি।”

রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু

পরিবহণ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার থেকেই অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই ২৫০ জন টোটোচালক আবেদন করেছেন। আবেদনকারীদের একটি অস্থায়ী এনরোলমেন্ট নম্বর দেওয়া হবে, যার সঙ্গে যুক্ত থাকবে কিউআর কোড-সহ স্টিকার। ওই স্টিকারটি টোটোর গায়ে লাগাতে হবে।

এই প্রক্রিয়া চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। এরপর যে সমস্ত টোটোর গায়ে কিউআর কোডযুক্ত স্টিকার থাকবে না, সেগুলিকে রাস্তা থেকে আটকানো হবে, জানাচ্ছে পরিবহণ দফতর।

কোথা থেকে আবেদন করা যাবে

টোটোচালকরা অনলাইনের পাশাপাশি প্রত্যেকটি আরটিও অফিসে স্থাপিত ক্যাম্পে বা বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। রাজ্যের সব ব্লকের সহায়তা কেন্দ্রের কর্মীদের এই বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, যাতে গ্রামীণ এলাকাতেও রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়া নির্বিঘ্ন হয়।

কেন এই পদক্ষেপ

পরিবহণ দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, রাজ্যে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ টোটো চলছে, যার কোনও সঠিক হিসাব সরকারের কাছে নেই। এই অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি যানজটের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ধাপে ধাপে টোটো নিয়ন্ত্রণে আনতে এই গাইডলাইন কার্যকর করা হচ্ছে।

প্রথম পর্যায়ে রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে, পরে প্রতিটি অঞ্চলে কতগুলি টোটো চলবে এবং কোন রুটে তারা চলাচল করতে পারবে—তা স্থানীয় পুরসভা বা পঞ্চায়েতের সঙ্গে আলোচনা করে নির্ধারণ করা হবে।

ভবিষ্যতে ড্রাইভিং লাইসেন্সও বাধ্যতামূলক

পরিবহণ দপ্তর জানিয়েছে, আগামী দিনে টোটো চালানোর জন্য চালকদের নির্দিষ্ট পরীক্ষার মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়াও বাধ্যতামূলক করা হবে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

বিরোধীদের দাবি, এই সিদ্ধান্ত টোটোচালকদের উপর অতিরিক্ত আর্থিক চাপ সৃষ্টি করবে। শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, “এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরকার সাধারণ টোটোচালকদের পকেট মারছে।”

অন্যদিকে, শাসক শিবিরের দাবি, এটি কোনও ‘জরিমানা নয়’, বরং টোটোচালকদের বৈধতা এবং সুরক্ষা দেওয়ার উদ্যোগ।