পাকিস্তানে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির গুলিতে খুন লস্কর-ই-তৈবার মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি আবু কাতাল
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: লস্কর-ই-তৈবার মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি আবু কাতালকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে পাকিস্তানে। শনিবার (১৫ মার্চ) তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয় ঝিলাম প্রদেশের দিনা এলাকায়। গাড়ি করে আসার সময় অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি তাঁর উপর হামলা চালায় এবং তাঁকে হত্যা করে। হামলার দায় এখনও পর্যন্ত কেউ স্বীকার করেনি।
ভয়ংকর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড
আবু কাতাল লস্কর-ই-তৈবার খুরেতা কম্যান্ডার ছিলেন এবং জম্মু-কাশ্মীরে একাধিক সন্ত্রাসবাদী হামলার পরিকল্পনা ও নির্দেশ দেওয়ার মূল হোতা ছিলেন। ২৬/১১ মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী, কুখ্যাত জঙ্গি হাফিজ সইদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবেও পরিচিত ছিলেন তিনি।
২০২৩ সালে রাজৌরিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় সাতজনের মৃত্যু হয়, যা কাতালেরই পরিকল্পিত ছিল। এছাড়া জম্মু-কাশ্মীরের রেয়াসি জেলার শিব খোরি মন্দির থেকে ফেরার পথে পূণ্যার্থী বোঝাই বাসে হামলার নির্দেশও তিনিই দিয়েছিলেন।
এনআইএ-এর চার্জশিটে অভিযুক্ত
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেই ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) আবু কাতালসহ আরও দুই পাকিস্তানি হ্যান্ডলার—সাজিত জুট ও কোয়াশিম—এর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছিল। চার্জশিটে বলা হয়, এই তিন অভিযুক্ত পাকিস্তান থেকে লস্কর-ই-তৈবার জঙ্গিদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে ভারতে পাঠিয়েছিল। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল জম্মু-কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনী ও সংখ্যালঘু সাধারণ নাগরিকদের উপর হামলা চালানো।
হত্যাকাণ্ডের পর প্রশ্নবিদ্ধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা
আবু কাতালের মতো মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি নেতার এমন হত্যাকাণ্ড পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, লস্কর-ই-তৈবার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বা প্রতিপক্ষ গোষ্ঠীর হামলার শিকার হতে পারেন তিনি।
আন্তর্জাতিক মহলের প্রতিক্রিয়া
আবু কাতালের মৃত্যুতে আন্তর্জাতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, লস্কর-ই-তৈবার কার্যক্রমে এটি একটি বড় আঘাত, তবে পাকিস্তানের মাটিতে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড নিরাপত্তা ব্যবস্থার বড় ব্যর্থতা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তদন্ত চলছে
পাকিস্তানের পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখছে। তবে এখনো পর্যন্ত হামলার দায় কেউ স্বীকার না করায় তদন্ত প্রক্রিয়া জটিল হয়ে উঠেছে।