Tuesday, March 25, 2025
Latestআন্তর্জাতিক

ইসরাইলের বিরুদ্ধে অবস্থান, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মাহমুদ খলিলকে গ্রেফতার করলো ট্রাম্প প্রশাসন

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্যালেস্তাইন-পন্থী আন্দোলনের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের প্রথম শিকার হলেন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ছাত্র মাহমুদ খলিল। শনিবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কের বিশ্ববিদ্যালয় বাসভবন থেকে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিওরিটি বিভাগের এজেন্টরা তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রিন কার্ডধারী এই শিক্ষার্থীকে ‘হামাসপন্থী উগ্র বিদেশি ছাত্র’ বলে অভিহিত করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

গ্রেপ্তার ও প্রশাসনের অবস্থান

ট্রাম্প লিখেছেন, “এটাই প্রথম গ্রেপ্তার, আরও অনেক হবে।” ট্রাম্প আরও দাবি করেছেন, খলিলের মতো আরও অনেক ছাত্র ক্যাম্পাসে “সন্ত্রাসবাদ-পন্থী, ইহুদি-বিরোধী এবং আমেরিকা-বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত”।

ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে যে তারা হামাস সমর্থকদের ভিসা এবং গ্রিন কার্ড বাতিল করবে। মার্কিন বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিওও সোশ্যাল মিডিয়ায় এ বিষয়ে নিজের মত প্রকাশ করেছেন।

মানবাধিকার লঙ্ঘন ও আইনি প্রশ্ন

মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই গ্রেপ্তারির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা বলেছে, খলিলের বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অপরাধের অভিযোগ বা হামাসকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের প্রমাণ নেই। মার্কিন আইন অনুযায়ী, শুধুমাত্র কোনো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে “বস্তুগত সহায়তা বা সম্পদ” প্রদানের ভিত্তিতেই গ্রেপ্তার সম্ভব। তবে খলিলের বিরুদ্ধে এমন কোনো প্রমাণ এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ

গত বছরের অক্টোবরে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে হামাসের আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় গাজায় আমেরিকার সমর্থনে ইজ়রায়েলের সামরিক অভিযানের ফলে আমেরিকাজুড়ে প্যালেস্তাইন-পন্থী আন্দোলন জোরদার হয়েছে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে ইজরায়েল-বিরোধী এবং প্যালেস্তাইন-পন্থী বিক্ষোভ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

খলিলের স্ত্রী, যিনি একজন মার্কিন নাগরিক এবং বর্তমানে আট মাসের গর্ভবতী, তার স্বামীর গ্রেপ্তারে গভীর শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোও ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে অবিচার ও মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে বর্ণনা করেছে।

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে 

মাহমুদ খলিলের গ্রেপ্তার আমেরিকার মানবাধিকার আন্দোলনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলছে এই ঘটনা। সমালোচকরা বলছেন, ইজরায়েল-পন্থী অবস্থানের বিপরীতে দাঁড়ানো ছাত্রদের মুখ বন্ধ করার লক্ষ্যে ট্রাম্প প্রশাসন এই ধরনের কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে।