নমাজ চলাকালীন পাকিস্তানের মসজিদে বিস্ফোরণ, আহত ৪
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে শুক্রবার এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল একটি মসজিদ। ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত চারজন, যাদের মধ্যে একজন স্থানীয় ইসলামি দলের নেতা এবং দুই শিশু রয়েছে। স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে জামিয়াত উলেমা ইসলাম-ফজল (JUI-F) রাজনৈতিক দলের নেতা আব্দুল্লাহ নাদিম গুরুতর আহত হয়েছেন।
বিস্ফোরণের লক্ষ্য ছিলেন আব্দুল্লাহ নাদিম
রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানা গেছে, বিস্ফোরণের প্রধান লক্ষ্য ছিলেন JUI-F দলের নেতা আব্দুল্লাহ নাদিম। দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের জেলা পুলিশ প্রধান আসিফ বাহাদুর জানিয়েছেন, নাদিম গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এখনও পর্যন্ত কোনও গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।
বিস্ফোরণ ও হিংসার বাড়বাড়ন্ত
সম্প্রতি পাকিস্তানের আফগানিস্তান সীমান্ত অঞ্চলে হামলার ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। ফেব্রুয়ারি মাসেও উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের একটি মাদ্রাসায় আত্মঘাতী হামলায় জুম্মাবারের নামাজের সময় ৬ জন প্রার্থনাকারী নিহত হয়েছিলেন।
বিস্ফোরণের পরপরই মসজিদ চত্বর জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কাজে হাত লাগায়। নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মসজিদটি ঘিরে ফেলে এবং তদন্ত শুরু করে।
সীমান্ত অঞ্চলে সন্ত্রাসের বাড়বাড়ন্ত
সম্প্রতি পাকিস্তানের সীমান্ত এলাকাগুলিতে হামলার ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে আফগানিস্তানের সঙ্গে সীমানা সংলগ্ন অঞ্চলে এই ধরনের হামলা সাধারণ হয়ে উঠেছে।
বালোচ বিদ্রোহীদের আক্রমণও ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। কিছুদিন আগেই বালোচ বিদ্রোহীরা একটি যাত্রীবাহী ট্রেন হাইজ্যাক করে এবং সেখানেও বহু মানুষ হতাহত হন। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই মসজিদে এই বিস্ফোরণ আরও একবার পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ত্রুটি উন্মোচন করল।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রশ্নের মুখে
এই ধারাবাহিক হামলা পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষ করে ধর্মীয় স্থানগুলোতে এমন হামলার পুনরাবৃত্তি প্রশাসনের কার্যক্ষমতা নিয়ে জনমনে সন্দেহ তৈরি করেছে।
প্রতিক্রিয়া ও তদন্ত
দেশটির সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসন এই হামলার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তদন্তকারীরা বিস্ফোরণস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন এবং আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন।
বিশ্বজুড়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে এই হামলা নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পাকিস্তানে সম্প্রতি ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসবাদী হামলার পেছনে কারা যুক্ত, তা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে এবং মসজিদসহ ধর্মীয় স্থানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উদ্বেগ ও আতঙ্কের পরিস্থিতি
এই ঘটনার পর পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ধর্মীয় স্থানগুলিতে এই ধরনের হামলা মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। পাকিস্তান সরকার এবং নিরাপত্তা বাহিনী কীভাবে এই সন্ত্রাসের মোকাবিলা করবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।


