Thursday, November 7, 2024
আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশের দিনাজপুরে দেবোত্তর এস্টেটের জমিতে অবৈধভাবে মসজিদ নির্মাণ

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: একশ্রেণীর প্রভাব প্রতিপত্তি ও ক্ষমতাশালী মহল কর্তৃক বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার চন্দ্রনাথ ধামের প্রায় তিন হাজার একরের উপর জমি, কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার শ্রী শ্রী আদিনাথ শিব মন্দিরের প্রায় একশো একরের উপর ভূমি, চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালীর শ্রী শ্রী চন্ডী দাম ও মেধস মন্দির প্রায় ২ একরের উপর ভূমি, 

বগুড়ার শেরপুরের ভবানীপুর গ্রামে অপর্ণা শক্তিপীঠ এর প্রায় ২শ একরের উপর ভূমি, সিলেটের কানাইঘাটের জয়ন্তী শক্তিপীঠের ১.৫ একর ভূমি ইতিমধ্যে বেদখল হয়েছে বলে জানা গেছে । 

গত ১৯ মার্চ ২০২৪ জাতীয় দৈনিক কাল বেলা পত্রিকা এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যে দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার কান্তনগর গ্রামে রাজ দেবোত্তর এস্টেটের জমিতে মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে সনাতন ধর্মাবলম্বী ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। 

পত্রিকাটি প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করেছে যে রাজ দেবোত্তর এস্টেটের এজেন্ট রনজিৎ কুমার সিংহ দেবোত্তর এস্টেটের নিজস্ব জমিতে অবৈধভাবে মসজিদ নির্মাণ বন্ধের জন্য আবেদন করেছেন।

গত ১৩ মার্চ রাজ দেবোত্তর এস্টেটের এজেন্ট রনজিৎ কুমার সিংহ জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, কাহারোল উপজেলার কান্তনগর মৌজায় সিএস ২নং খতিয়ানটি শ্রী শ্রী কান্তজিউ বিগ্রহ সেবাইত অনারেবল মহাজার জগদিশ নাথ রায় নামে প্রচারিত। ওই খতিয়ানে ৯৪ দশমিক ৭ একর ও এস এ ৫ নং খতিয়ানে রাজ দেবোত্তর এস্টেটের পক্ষে জিম্মাদার জেলা প্রশাসক ১৯টি দাগে ৬২ দশমিক ৪৬ একর জমি রয়েছে। যা ১৪৩০ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত খাজনা হালনাগাদ রয়েছে। গত ১০ মার্চ তিনি জানতে পারেন, কান্তনগর মৌজার ৫ ও ১৬নং দাগের রাজ দেবোত্তর এস্টেটের সম্পত্তির ওপর একটি পাকা মসজিদ তৈরি করা হচ্ছে। এটা শুনে গত ১১ মার্চ তিনি নির্মাণাধীন মসজিদের জায়গাটি পরিদর্শন করেন। সেখানে উপস্থিত মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি মোজাম্মেল হককে তিনি জিজ্ঞেস করেন কীভাবে রাজ দেবোত্তর এস্টেটের জায়গায় মসজিদ নির্মাণ করছেন।

তিনি জানান, ১৯৭৬ সালে দিনাজপুরের ডিসি উক্ত জমি তাদেরকে দিয়েছেন। তার নিকট দলিল দেখতে চাইলে তিনি একটি হাতে লেখা তিন পৃষ্ঠার আপসনামার ফটোকপি প্রদান করেন। কপিটি রেজিস্ট্রিকৃত দলিল নয় আর সেখানে মালিকানা হস্তান্তরের কোনো কথা উল্লেখ নেই। আপসনামাটি ভুয়া ও বানোয়াট মনে হয়। তা ছাড়া ১৯৯৯ সালের ৫১ ডিএলআর দেবোত্তর আইনে বলা হয়েছে, দেবোত্তর সম্পত্তি হস্তান্তরযোগ্য নয়, উহা সকল সময়ের জন্য দেবোত্তর সম্পত্তি। রাজ দেবোত্তর এস্টেটের সম্পত্তিতে অবৈধভাবে মসজিদ নির্মাণকাজ শুরু করায় এলাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাই অবিলম্বে কাজ বন্ধ করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করছি।

এই আবেদন পাওয়ার পর জেলা প্রশাসক কাহারোল উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে কাজ বন্ধসহ তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন বলে পত্রিকাটি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।

এ দিকে কান্তজি মন্দিরের কিছু ভূমি ও বিভিন্ন নামে লিজ নিয়ে বেদখল হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন লোকের পোস্ট থেকে জানা গেছে ।

কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য যে সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, হিন্দু মহাজোট বা ধর্মীয় অন্যান্য সংগঠনগুলো ও সংখ্যালঘু এমপিরা এসব ব্যাপারে নিশ্চুপ।