বাংলাদেশে প্রকাশ্যে মৌলবাদ ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে কুখ্যাত পাক জঙ্গিনেতা জহির
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: বাংলাদেশে সভা, সমাবেশ করে বেড়াচ্ছে পাকিস্তানের কুখ্যাত জঙ্গি নেতা। সম্প্রতি লস্কর-ই-তৈবার প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সইদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও পাকিস্তানের মারকাজি জমিয়তে আহলে হাদিসের সাধারণ সম্পাদক ইবতিসাম ইলাহি জহিরের বাংলাদেশ সফর নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সংস্থাগুলি।
ইন্ডিয়া টুডে’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, জহির গত ২৫ অক্টোবর ঢাকায় পৌঁছন। এরপর তিনি রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সহ একাধিক সীমান্তবর্তী জেলায় যান। চলতি সপ্তাহে রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারি, জয়পুরহাট ও নগাঁও জেলায় সফরের পরিকল্পনা রয়েছে তার। এই সফরকে ঘিরে গোয়েন্দা মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, কারণ এটিই ২০২৫ সালে তার দ্বিতীয় বাংলাদেশ সফর। এর আগে ফেব্রুয়ারিতেও তিনি এক সপ্তাহের বেশি সময় বাংলাদেশে অবস্থান করেছিলেন।
সূত্রের খবর, রাজশাহির ডাঙ্গিপাড়ায় আগামী ৬ ও ৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে চলা মেগা সালাফি সম্মেলনে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে ইবতিসাম ইলাহির। এরপর ৮ নভেম্বর পাকিস্তানে ফেরার পরিকল্পনা রয়েছে তার।
এরই মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ্যে এসেছে জহিরের একটি ভিডিও বার্তা, যা আরও উদ্বেগ বাড়িয়েছে। ওই ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়— “চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইসলামের জন্য নিজেকে এবং আপনার সন্তানকে উৎসর্গ করতে প্রস্তুত থাকুন। পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত সকল মুসলমান ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হবে।”
কাশ্মীর প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন— “কাশ্মীরিদের স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। কাশ্মীরে যে অন্যায় হচ্ছে তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া পাকিস্তানের দায়িত্ব। ইনশাল্লাহ, এমন দিন আসবে যখন কাশ্মীর পাকিস্তানের অংশ হবে।”
এই মন্তব্যের পর থেকেই নিরাপত্তা সংস্থাগুলো সতর্ক অবস্থানে। সীমান্তবর্তী এলাকায় তার উস্কানিমূলক কার্যকলাপ নিয়ে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থারাও নজরদারি বাড়িয়েছে। বিশেষত রাজশাহী, রংপুর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের মতো স্পর্শকাতর অঞ্চলে জহিরের কার্যকলাপ দুই দেশের নিরাপত্তা কাঠামোর জন্যই আশঙ্কাজনক বলে মনে করা হচ্ছে।
যদিও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনও পর্যন্ত জহিরের সফর নিয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি, তবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক ইতিমধ্যেই তার বক্তব্য ও সফরসূচি বিশ্লেষণ করে দক্ষিণ এশিয়ায় চরমপন্থার সম্ভাব্য পুনরুত্থান নিয়ে সতর্ক বার্তা দিয়েছেন।
বাংলাদেশের মাটিতে লস্কর-ঘনিষ্ঠ নেতার এমন সরব কার্যকলাপ নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। এরফলে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলিতে মৌলবাদ চাড়া দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।


