কোনও মহিলা পরকীয়ায় জড়িত মানেই তিনি খারাপ মা নন: হাইকোর্ট
লুধিয়ানা: মা কথাটি ছোট্ট অতি কিন্তু জেনো ভাই, ইহার চেয়ে নাম যে মধুর ত্রিভুবনে নাই। মা এমন একজন মানুষ, যিনি সন্তানের সব কষ্ট হাসিমুখে সয়ে যান, নিজে না খেয়ে সন্তানের মুখে খাবার তুলে দেন। মা নিজের সন্তানের জন্য নিজের জীবন বাজি রাখতেও পারেন। একজন মা নিজের স্বামীকে ছেড়ে অন্য পুরুষের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে আছে। সেক্ষেত্রে কি তিনি ভালো নন। পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে এবার যুগান্তকারী রায় দিল পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট।
নিজের চার বছরের মেয়েকে নিজের কাছে রাখার জন্য এক তরুণী আদালতে মামলা দায়ের করেন। তাতেই এই রায় শোনান পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের বিচারপতি। আদালতের কাছে মামলা তরুণী করা ওই তরুণী অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা ও স্থায়ী রোজগেরে। অস্ট্রেলিয়ার সরকারের কাছ থেকেও তিনি সমস্ত সুবিধা ও সাহায্য ভোগ করেন। তার স্বামীও অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। তবে তিনি ভারতে বসবাস করেন।
তরুণীর স্বামী অভিযোগ, তার স্ত্রীর অন্য পুরুষের সাথে সম্পর্কে রয়েছে। তাই শিশুকন্যাকে মায়ের হেফাজতে রাখতে রাজি ছিলেন না তাঁর স্বামী। এই মামলার উপর ভিত্তি করে বিচারপতি অনুপিন্দর সিং গ্রেওয়াল বলেন, পুরুষ শাসনতান্ত্রিক সমাজে কোনো কারণ ছাড়াই মহিলাদের চরিত্র নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়। কিন্তু সেই দিক থেকে বিচার করলে দেখা যায় বেশিরভাগ অভিযোগই ভুয়ো। আর যদি কোনও পরকীয়া সম্পর্কে লিপ্ত, তাহলেও তার অর্থ এটা হয় না যে, তিনি ভালো মা হতে পারবেন না। তাঁর সন্তানকে নিজের কাছে রাখতে পারবেন না।
বিচারপতি আরো বলেন, আধুনিক সময় দেখা যায় একক অভিভাবকের কাছে বড় হওয়া সন্তানরা অনেক সময় দায়িত্ববান প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে বেড়ে উঠে নানা ক্ষেত্রে দেশকে সমৃদ্ধ করেন। মা যদি অন্য কোন পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে লিপ্ত থাকে সেক্ষেত্রে তার বাচ্চাকে তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়ার কোন অধিকারই নেই।
হাইকোর্টের এই রায় ঘোষণার পর জোর চর্চা শুরু হয়েছে। একপক্ষ বলছেন, মহিলারা ন্যায়বিচার পেলেন। আরেক পক্ষ বলছেন, মহিলাদের ক্ষমতা–বৃদ্ধি করে আদালত সমাজের ক্ষতি করল। – Live Law