বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের এনে পশ্চিমবঙ্গের ভোটার লিস্টে ঢোকাতে চাইছে তৃণমূল: দিলীপ ঘোষ
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিবেশ। বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা দিলীপ ঘোষ তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর দাবি, প্রতি বিধানসভা কেন্দ্রে ৫,০০০ থেকে ১০,০০০ করে বাংলাদেশি নাগরিকের নাম ভোটার তালিকায় ঢোকানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল। বিজেপি যাতে আগেভাগে এই ইস্যুতে সরব না হতে পারে, তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উল্টে বিজেপির দিকেই অভিযোগের তির ঘোরানোর চেষ্টা করছেন।
দিলীপ ঘোষের দাবি: বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় ঢোকানোর ষড়যন্ত্র
দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল জানে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে হিন্দুরা তাদের বিরুদ্ধে ভোট দেবে। তাই বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা এবং অনুপ্রবেশকারীদের এনে তাদের ভোটার তালিকায় সংযোজন করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘কুম্ভ মেলায় কোটি কোটি হিন্দুর সমাগম দেখে তৃণমূল ভয় পেয়ে গেছে। তারা বুঝতে পারছে, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্রের মতো পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুরাও ভোটের সময় তাদের বিরুদ্ধে রায় দেবে। তাই আগে থেকেই রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় ঢোকানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’’
তৃণমূলের পাল্টা যুক্তি: বিজেপি বিভাজনের রাজনীতি করছে
তৃণমূল কংগ্রেস এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের দাবি, বিজেপি ইচ্ছাকৃতভাবে বিভাজনের রাজনীতি করছে এবং সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের জন্য ‘ভূতুড়ে ভোটার’ ইস্যুকে কাজে লাগাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে দলের কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন, ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখে ভুয়ো নাম বাদ দিতে হবে। তৃণমূলের দাবি, এই প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার স্বার্থেই করা হচ্ছে, এতে অনুপ্রবেশকারীদের যোগদানের প্রশ্নই ওঠে না।
ভোটের আগে উত্তাপ বাড়ছে রাজ্য রাজনীতিতে
ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরুর আগেই তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে চাপানউতোর তুঙ্গে পৌঁছেছে। বিজেপি দাবি করছে, তৃণমূল হিন্দু ভোট কাটতে বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গাদের নাম জুড়ছে, অন্যদিকে তৃণমূল বলছে, বিজেপি বিভেদ সৃষ্টি করতে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই বিতর্ক আরও গভীর হবে এবং দুই দলই নিজেদের অবস্থান ধরে রেখে প্রচার চালাবে। ভোটার তালিকা সংক্রান্ত এই লড়াই শেষ পর্যন্ত কতটা প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে।