দিল্লিতে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ অমিত শাহের
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: রাজধানী দিল্লিতে অবৈধ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে তাদের ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুক্রবার দিল্লির নবনির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা, পুলিশমন্ত্রী আশিস সুদ, দিল্লি পুলিশ কমিশনার এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই নির্দেশ দেন তিনি।
অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের বার্তা
বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ স্পষ্ট বলেন, “বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু তাদেরই নয়, যারা এদের ঢুকতে সাহায্য করছে, কাগজপত্র তৈরি করে দিচ্ছে এবং থাকার ব্যবস্থা করছে, সেই পুরো চক্রকেই নির্মূল করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “এটি জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন। কেন্দ্রীয় সরকার চায়, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত তাদের দেশছাড়া করা হোক।”
‘বাংলাদেশ সেল’ পুনরুজ্জীবিত, বাড়ছে নজরদারি
গত বছর দিল্লি পুলিশ পাঁচজন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেপ্তার করার পর নতুন করে সক্রিয় করা হয় ‘বাংলাদেশ সেল’। দুই দশক আগে গঠিত এই সেল মূলত দিল্লির বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্তকরণ ও তাদের দেশ থেকে বের করে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করত। এবার সেই সেলের কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে বলে জানা গেছে।
মাদক ও অপরাধ দমনের কড়া নির্দেশ
শুধু অনুপ্রবেশই নয়, মাদক নিয়ন্ত্রণের বিষয়েও কড়া বার্তা দিয়েছেন অমিত শাহ। তিনি পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন, “দিল্লিতে মাদক পাচার রুখতে হবে এবং যারা এর সঙ্গে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।”
বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের অভিযোগ বাড়ছে
ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর রিপোর্ট অনুযায়ী, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থির থাকায় সেখান থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশের প্রবণতা বেড়েছে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ ও আসামের সীমান্ত পেরিয়ে অনেকে দিল্লিসহ বিভিন্ন মেট্রো শহরে প্রবেশ করছে বলে অভিযোগ। দিল্লির কিছু এলাকায় এসব অনুপ্রবেশকারীদের গোপনে আশ্রয় দেওয়ারও প্রমাণ মিলেছে।
বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া
বিজেপির পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপকে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে জরুরি বলে দাবি করা হলেও, বিরোধী দলগুলোর একাংশ বলছে, এটি আসলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ, যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। যদিও সরকার বলছে, তাদের একমাত্র লক্ষ্য অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ করা এবং ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
পরবর্তী পদক্ষেপ কী?
দিল্লি পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দ্রুত বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা তৈরি করতে এবং আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাদের দেশ থেকে বের করার ব্যবস্থা নিতে। এছাড়া, যারা এই অনুপ্রবেশে সহায়তা করছে, তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী দিনে দিল্লিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হতে পারে। DD News
