Thursday, April 25, 2024
আন্তর্জাতিক

পিরিয়ড সম্পর্কে ‘স্কুলে ছেলে ও মেয়েদের একসাথে পড়ানো উচিত’- বলছে ব্রিটিশ দাতব্য সংস্থা

যুক্তরাজ্যের দাতব্য প্রতিষ্ঠান প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল ইউকে বলছে, স্কুলের ছেলে ও মেয়েদেরকে ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড সম্পর্কে এক সাথে শিক্ষা দান করা উচিত।

সংস্থাটি বলছে, এ নিয়ে কথা না বলাটাই ক্ষতিকর, তাই শ্রেণীকক্ষে এ বিষয়ে আলোচনা হওয়া দরকার।

এই প্রতিষ্ঠানটি ১৪ থেকে ২১ বছর বয়েসের মেয়েদের ওপর একটি জরিপ চালিয়ে দেখেছে, অর্ধেক মেয়েই এ বিষয়ে কথা বলতে লজ্জা বোধ করে।

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল ইউকের কর্মকর্তা কেরি স্মিথ বলছেন, আমার মনে হয় পিরিয়ডকে একটা নিষিদ্ধ বিষয় হিসেবে দেখা হয়, ছেলে এবং মেয়েদেরও এ নিয়ে যথেষ্ট বলা হয় না।

জরিপে অংশ নেয়া মেয়েদের প্রতি সাতজনের একজন বলেন, তাদের যখন প্রথম পিরিয়ড শুরু হয় তখন তারা জানতেন না যে এটা কি হচ্ছে।

এদের একজন নিনা, যার ১২ বছর বয়েসে পিরিয়ড শুরু হয়। তিনি বলছিলেন, “আমি নিচে তাকিয়ে দেখলাম রক্ত। দেখে আমার তো প্রায় পাগল হবার দশা”

“তখন আমার মা আমাকে একটা স্যানিটারি টাওয়েল দিলেন, কিন্তু বিশেষ কিছু বললেন না। আমি ভাবছিলাম, যদি এর ফলে আমি মারা যাই তাহলে কি হবে।”

আরেকজন তরুণী ইনেস – বয়েস ১৮। তিনি বললেন, এ নিয়ে তার ছেলে বন্ধুদের সাথে কথা বলতেও তাকে গলদঘর্ম হতে হয়েছে।

“আমি একটা স্যানিটারি টাওয়েল কিনতে গেলাম, কিন্তু ছেলেরা এটা বুঝে ফেললো , তারা বলতে লাগলো, আমরা বাতাসে লোহার গন্ধ পাচ্ছি। আমার মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছিল।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ক্লেয়ার বলছেন, তিনি তার ভাইয়ের সাথেও এ নিয়ে কথা বলেন। “ছেলেদের সাথে এ নিয়ে কথা বললে তারা কি মরে যাবে? বরং এ নিয়ে আর মাথা ঘামাবে না।”

জরিপে অংশ নেয়া ছেলেদের মধ্যে একজন হচ্ছেন ১৯ বছরের নিদার। তিনি বলছেন, তিনি পিরিয়ড সম্পর্কে জানতে চান না।

তার কথা- “পিরিয়ড একটা প্রাকৃতিক ব্যাপার, এটা কোন দোষ নয়। কিন্তু এটা নিয়ে কথা বলারও কিছু নেই। আমার যদি জ্বর হয়, তাহলে আমি তো আপনাকে বলতে যাবো না যে আমার জ্বর হয়েছে?”

ইংল্যান্ডের শিক্ষা বিভাগের একজন মুখপাত্র এ ব্যাপারে বলেছেন, স্কুলগুলো ইতিমধ্যেই যৌন শিক্ষা কর্মসূচির আওতায় এ বিষেয় শিক্ষাদান করতে পারছে। এটা জাতীয় বিজ্ঞান পাঠ্যসূচির মধ্যেও আছে।

পিরিয়ড বা মাসিক কী?

চন্দ্রমাস অনুয়ায়ী, মেয়েদের জরায়ু যে পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায় এবং প্রতিমাসে হরমোনের প্রভাবে মেয়েদের যোনিপথ দিয়ে যে রক্ত ও জরায়ু নিঃসৃত তরল পদার্থ বের হয়ে আসে, মাসিক বা ঋতুস্রাব বলে৷

তবে অর্ধেক মেয়েই এ বিষয়ে কথা বলতে লজ্জা বোধ করে। অনেকে ধারণা করেন মাসিক ব্যাপারটা নোংরা অথবা ঋতুস্রাবের সময় মেয়েরা দুর্বল হয়ে পড়ে ৷ অনেকে আবার মনে করেন ঋতুস্রাবের মধ্যে কোনো ‘অপবিত্রতা’ লুকিয়ে আছে৷ তবে আপনাকে এটা ভুললে তো চোলবে না যে, এই ঋতুচক্রের ফলেই কিন্তু আপনি এই পৃথিবীতে এসেছেন৷

সূত্র- বিবিসি