অনাথ ৪ শিশুর পাশে দাঁড়ালেন বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউরি
বাঁকুড়া: নিজে ১০০ দিনের কাজ করেছেন। স্বামী দিনমজুর। সারাদিনের রোজগার ৪০০ টাকা। বিজেপির অতি দরিদ্র বিধায়ক চন্দনা বাউরি। তিনি নিজে গরিব হওয়া সত্ত্বেও করোনা পরিস্থিতিতে দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ালেন। যাতে ফের মানুষ দ্রুততার সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাঁদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরতে পারে।
তাঁর স্বপ্ন ছিল শালতোড়ার বিধায়ক হয়ে এলাকাবাসীর পাশে দাঁড়াতে। নিজস্ব চার চাকা না থাকায় তিনি বাইকে করে বেরিয়ে পড়েছেন এলাকাবাসীর মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। অভাব তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারিনি। এবার শালতোড়ার ৪ অনাথ শিশুর পাশে দাঁড়ালেন তিনি। প্রতিশ্রুতি দিলেন নিজের সাধ্যমতো তাদের পাশে থাকার।
বেশ কিছুদিন আগে বাবা-মাকে হারিয়েছেন ওই চার ভাইবোন। একটা ঝুপড়ির মধ্যে কোনওরকমে বসবাস করে তারা। দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোটে না তাদের। এই খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন চন্দনা দেবী। চার বাচ্চাকে কিছুদিনের খাবার, মাস্ক, স্যানিটাইজার, এক সেট করে জামা-কাপড় দেন তিনি। নিজের হাতে তাদের মাস্ক পরিয়ে দেন। বিডিওকে তাদের রেশন কার্ডের ব্যবস্থা করে দেওবার কথা দেন।
অন্যান্য বাচ্চাদের হাতেও জামা কাপড় মাক্স স্যানিটাইজার তুলে দেন চন্দনা বাউরি। চন্দনা দেবী জানান, আপদে-বিপদে এলাকাবাসীর পাশে রয়েছেন তিনি। এলাকাবাসীর মাঝে এদিন মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিলি করেন তিনি। সকলকে মাস্ক পরার এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার করার অনুরোধ করেন তিনি।
বিধানসভা ভোটে বিজেপির সবচেয়ে এই দরিদ্র বিধায়ক শালতোড়ার একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে কুঁড়েঘরে থাকেন। জায়গা জমি নেই বললেই চলে। সম্বল বলতে তিনটে ছাগল, তিনটে গরু। নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রয়েছে ৩১ হাজার ৯৮৫ টাকা।
উল্লেখ্য, বিজেপির ১৫ জন বিধায়ক কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা প্রত্যাহার করেছেন। চন্দনা বাউরি তাঁদের মধ্যে একজন। তিনি নিরাপত্তার জন্যে আবেদন জানাননি। চন্দনা দেবীর বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ নেই। নেই শৌচাগার। পড়াশোনায় ভালো থাকা সত্বেও বাবা মারা যাওয়ার কারণে মাধ্যমিক পাশের পরে আর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি চন্দনা বাউরি। তিন সন্তানের মা চন্দনা দেবী এখন সুখে-দুঃখে এলাকার মানুষের পাশে থাকতে চান। যথাসাধ্য কাজ করতে চান।