গত ২ দিনে ২৫৮ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন, উচ্ছসিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ভারতের মাওবাদী বিদ্রোহ দমনে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। গত দুই দিনে ২৫৮ জন অস্ত্রধারী মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক বিবৃতিতে বলেন, “গত দুই দিনে মোট ২৫৮ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন। এটি মাওবাদী দমনের ক্ষেত্রে এক ঐতিহাসিক দিন।”
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ছত্তিশগড়ে বৃহস্পতিবার ১৭০ জন এবং বুধবার আরও ২৭ জন আত্মসমর্পণ করে। পাশাপাশি প্রতিবেশী মহারাষ্ট্রে ৬১ জন মাওবাদী অস্ত্র সমর্পণ করেছে। অমিত শাহের দাবি, “সহিংসতা ত্যাগ করার এই সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে, নকশালবাদ এখন মৃত্যুপথযাত্রী।”
নকশালবাদের শিকড় ও বিকাশ
নকশাল আন্দোলনের সূচনা হয় ১৯৬৭ সালে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার নকশালবাড়ি গ্রামে। জমির অধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচারের দাবিতে একদল কৃষক স্থানীয় জমিদারদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। সেই আন্দোলন থেকেই জন্ম নেয় ‘নকশালবাদ’ শব্দটির।
পরে এটি ভারতের বামপন্থী সশস্ত্র আন্দোলনের প্রতীক হয়ে ওঠে। ২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে নকশাল প্রভাব দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল, যেখানে আনুমানিক ১৫ থেকে ২০ হাজার সক্রিয় যোদ্ধা ছিল। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতে প্রায় ১২ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন—যাদের মধ্যে রয়েছে বিদ্রোহী, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও সাধারণ নাগরিক।
সরকারের পরিকল্পনা ও অবস্থান
নয়াদিল্লি ঘোষণা করেছে, ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে নকশালবাদ পুরোপুরি দমন করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, “যারা অস্ত্র ত্যাগ করে সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে চায়, সরকার তাদের পাশে থাকবে। পুনর্বাসন কর্মসূচি আরও সম্প্রসারিত করা হচ্ছে।”
কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের যৌথ অভিযানে গত কয়েক বছরে মাওবাদীদের প্রভাব দ্রুত হ্রাস পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মত
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করেন, সরকারের ধারাবাহিক পদক্ষেপ এবং আধুনিক গোয়েন্দা কৌশল মাওবাদী আন্দোলনকে কার্যত কোণঠাসা করেছে।


