‘আমেরিকা বিরোধী’ পোস্টে লাইক, শেয়ার করলেই ভিসা বাতিল, স্ব-নির্বাসনের চিঠি শত শত পড়ুয়াকে
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: সম্প্রতি একাধিক ভারতীয় পড়ুয়া সহ শতাধিক বিদেশি ছাত্রছাত্রীকে ‘স্ব-নির্বাসন’ বেছে নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে ইমেল পাঠানো হয়েছে। মূলত যারা ক্যাম্পাসে প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন, মার্কিন বিরোধী পোস্ট শেয়ার বা লাইক করেছেন, কিংবা অতীতে ছোটোখাটো অপরাধে যুক্ত ছিলেন, তাঁদের টার্গেট করছে ট্রাম্প প্রশাসন।
ছোট অপরাধেও বড় শাস্তি
নতুন তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন বিদেশ দফতর থেকে যেসব পড়ুয়াদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে অনেকেই কেবলমাত্র ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো কিংবা দোকানে চুরির মতো ছোট অপরাধে অভিযুক্ত। যদিও মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ দাবি করছে, এ ধরনের অপরাধের ফলস্বরূপ দেশত্যাগ সংক্রান্ত নির্দেশনা যথার্থ এবং আইনসঙ্গত।
“CBP অ্যাপে গিয়ে স্ব-নির্বাসন বেছে নিন”
যেসব শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে, তাঁদের ‘সেল্ফ ডিপোর্ট’ অর্থাৎ স্ব-নির্বাসনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ইমেলে জানানো হয়েছে, CBP (Customs and Border Protection) অ্যাপ ব্যবহার করে দেশ ছাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তা না করলে, তাঁদের জোরপূর্বক নির্বাসিত করা হবে, এবং ভবিষ্যতে মার্কিন ভিসার জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হতে পারে।
আতঙ্কিত ভারতীয় পড়ুয়ারা
বিশেষ করে অ্যারিজোনা, কর্নেল, টেক্সাস, কলোরাডো, নর্থ ক্যারোলিনা ও ওরিগন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ভারতীয় পড়ুয়াকে এমন ইমেল পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। টেক্সাসের অভিবাসন আইনজীবী চাঁদ পারাভাথনেনি জানান, গত চার দিনে বহু ভারতীয় শিক্ষার্থী তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন একই ধরনের সমস্যার জন্য। তাঁর মতে, এত সাধারণ কারণে ভিসা বাতিল হওয়া এক কথায় নজিরবিহীন।
জাতীয় নিরাপত্তা না কি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা?
মার্কিন বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক বিবৃতিতে জানান, “জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।” যদিও তিনি স্পষ্ট করে বলেননি, ঠিক কোন ধরনের কার্যকলাপে ভিসা বাতিল হবে। এই অস্পষ্টতা আরও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
রাজনীতি না প্রশাসনিক কঠোরতা?
বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ কেবলমাত্র অভিবাসন নীতির কঠোরতা নয়, বরং রাজনৈতিক বার্তাও বহন করছে। নির্বাচনের আবহে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে প্রশাসনিক কড়াকড়ি জারি করে জনমত প্রভাবিত করার চেষ্টা স্পষ্ট।