অতিরিক্ত শূন্যপদ মামলায় CBI তদন্তের নির্দেশ খারিজ সুপ্রিম কোর্টে
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: চাকরি দুর্নীতির অভিযোগে প্রায় ২৫ হাজার নিয়োগ বাতিলের অস্বস্তির মধ্যেই আংশিক স্বস্তি পেল রাজ্য সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে তৈরি হওয়া ‘সুপার নিউমেরারি’ (অতিরিক্ত শূন্যপদ) পদগুলিকে কেন্দ্র করে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ যে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল, তা এদিন খারিজ করে দিল দেশের শীর্ষ আদালত।
সাংবিধানিক কাঠামোয় হস্তক্ষেপ নয়
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানায়, রাজ্য মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অতিরিক্ত পদ তৈরি করা কোনোভাবেই অবৈধ নয়। বরং সেই পদ সৃষ্টি করা হয়েছিল অপেক্ষমাণ চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগের উদ্দেশ্যে। বিচারপতির মন্তব্য, “যখন রাজ্য মন্ত্রিসভা একটি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেয়, তখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তাতে হস্তক্ষেপ করা অসাংবিধানিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী।”
আদালত আরও জানায়, এই পদ সৃষ্টির ক্ষেত্রে রাজ্যপালের সম্মতিও নেওয়া হয়েছিল এবং প্রক্রিয়াটি প্রশাসনিক নিয়ম মেনে হয়েছিল। ফলে এতে আদালতের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই।
তবে তদন্ত চলবে অন্য নিয়োগে
তবে এই রায়ে রাজ্য সরকার যেমন স্বস্তি পেয়েছে, তেমনই সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক ও কর্মচারীর নিয়োগ সংক্রান্ত অন্যান্য অভিযোগে সিবিআই তদন্ত যথারীতি চলবে। অর্থাৎ নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ, গ্রুপ ডি, গ্রুপ সি-সহ বাকি দুর্নীতির অভিযোগগুলি এখনও তদন্তাধীন।
প্রতিক্রিয়ায় মামলাকারীদের অবস্থান
এই রায়ের পর মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট শুধু অতিরিক্ত পদ তৈরি নিয়ে সিবিআই তদন্ত বন্ধ করেছে। তবে অন্যান্য দুর্নীতির বিষয়ে বিচার যেমন চলেছে, তেমনই চলবে। আমরা আইনের পথেই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেব।”
মামলাকারী দলের আরেক আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের কথায়, “সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত নিয়ে সিবিআই তদন্ত হবে না। কিন্তু আদালত এটা বলেনি যে সুপার নিউমেরারি পোস্ট বৈধ। এই বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আমরা কলকাতা হাইকোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করব।”