পুতিনের বিরুদ্ধে নির্বাচনে লড়বেন রুশ মডেল সেনিয়া সোবচাক!
রাশিয়ার আগামী বছরের মার্চে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে লড়বেন দেশটির জনপ্রিয় টেলিভিশন উপস্থাপক এবং মডেল সেনিয়া সোবচাক।
নির্বাচনে পুতিনকে চ্যালেঞ্জ জানাতে বুধবার এক ঘোষণায় নিজের ইচ্ছার কথা জানান সেনিয়া। নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ৩৫ বছর বয়সী সেনিয়া সবচাক এক ইউটিউব ভিডিওর মাধ্যমে নির্বাচনে লড়ার ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে নিজের প্রার্থিতার ঘোষণা দিয়ে রাশিয়ার বহুল প্রচারিত দৈনিক ভেদোমোস্তিতে একটি চিঠিও প্রকাশ করেছেন তিনি।
ঘোষণায় সেনিয়া বলেন, আমার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। কয়েক মাস ধরে এটা নিয়ে আমি ভেবেছি। দেশের শীর্ষ পদের জন্য লড়ার সম্পূর্ণ অধিকার তার রয়েছে। তাই ভোটে দাঁড়াচ্ছেন তিনি।
সেনিয়া বলেন, প্রথম যখন ভোটাধিকার প্রয়োগের বয়স হয়েছিল, তখন থেকেই তিনি দেখছেন ক্ষমতায় রয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। অতএব এবার বদল জরুরি।

পত্রিকায় চিঠি লিখে সমর্থকদের উদ্দেশে সেনিয়া বলেছেন, ‘নির্বাচনে আপনারা আপনাদের অবস্থান দেখাতে চান। কিন্তু নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য আপনাদের প্রার্থীর অনুমতি নেই। আপনাদের কোনো প্রার্থী নেই। সুতরাং সেনিয়াকেই ভোট দিন।’
এক্সিট পোল জানাচ্ছে, চতুর্থবারের জন্য ক্ষমতায় আসবেন ভ্লাদিমির পুতিনই। তবে কসনিয়ার দাবি, রাশিয়ার উদারমনস্ক ভোটদাতারা পুতিনের ওপর খুশি নয়। তাই সেই ভোটব্যাঙ্কের ওপর ভরসা রাখছেন তিনি। তারা নতুন কাউকে চাইছেন। আর সেটাই তাকে জয়ের সম্ভাবনা দেখাচ্ছে।
পুতিনের সমালোচক অ্যালেকজি নাভালনির অভিযোগ, এই দেশের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক পুতিনের সঙ্গে নেই। কারণ পুতিনের দুর্নীতিগ্রস্ত শাসনব্যবস্থা রাশিয়াকে বিশ্বের দরবার থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে।
রাশিয়ায় প্লে-বয় পত্রিকার প্রচ্ছদেও দেখা মিলেছিল তাঁর। আর সেই তিনিই এবার লড়বেন পুতিনের বিরুদ্ধে। একইসঙ্গে সঞ্চালনা, মডেলিং, টেলিভিশন তারকা সেনিয়া। ইনস্টাগ্রামে খোলামেলা পোশাকে একের পর ছবি। পেশাজীবনে সেনিয়া একজন জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপক। ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক মাধ্যমে সেনিয়া খুবই জনপ্রিয়। এখানে তার ৫২ লাখ অনুসারী রয়েছে। ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে তাকে প্রায়ই মার্কিন তারকা প্যারিস হিলটনের সঙ্গে তুলনা করা হয়।
২০১২ সালে ভ্লাদিমির প্রেসিডেন্ট পদে পুনর্নির্বাচিত হয়ে ওঠার পরই বিরোধী রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন সেনিয়া। তারপর থেকেই প্রতিটি পুতিনবিরোধী সমাবেশে দেখা গিয়েছে সেনিয়াকে।
সেনিয়ার বাবা আনাতোলি সচবাক পুতিনের একজন ঘনিষ্ঠ মিত্র ও সোভিয়েত-উত্তর যুগে সেইন্ট পিটার্সবার্গের প্রথম মেয়র ছিলেন। পুতিনের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণাকালে ২০০০ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এবং তাঁর মা লুদমিলা নারুসোভাও রুশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের সদস্য। সুতরাং এমন বাবা-মায়ের মেয়ে কোনো না কোনো সময় যে রাজনীতিতে আসবেন, তা যেন ছিলো অবধারিতই।