Monday, May 19, 2025
Latestআন্তর্জাতিক

ফিলিস্তিনপন্থী পোস্টে লাইক, শেয়ার করলেও স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল করছে আমেরিকা 

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর সাম্প্রতিক সময়ে শত শত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর স্টুডেন্ট ভিসা (এফ-১) বাতিল করেছে। মূলত ফিলিস্তিনপন্থি ক্যাম্পাস অ্যাক্টিভিজমে অংশ নেওয়া বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফিলিস্তিন-সম্পর্কিত পোস্ট শেয়ার বা লাইক করার কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ভিসা বাতিলের পেছনের কারণ

ইমিগ্রেশন-সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের বরাতে জানা গেছে, কেবলমাত্র ক্যাম্পাসে সরাসরি অংশগ্রহণকারীরা নয়, বরং অনলাইনে মতামত প্রকাশকারীরাও এই সিদ্ধান্তের আওতায় পড়েছেন। মার্কিন সরকার এবং কনস্যুলার কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের সোশ্যাল মিডিয়া কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। এই কঠোর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে একাডেমিক স্টাডি, ভোকেশনাল স্টাডি, বা এক্সচেঞ্জ ভিসার জন্য আবেদনকারীদের ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত তদন্ত চালানো হচ্ছে।

ভারতীয় শিক্ষার্থীরাও ভুক্তভোগী

টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে যুক্তরাষ্ট্রে ১.১ মিলিয়ন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ছিল, যার মধ্যে ৩ লাখ ৩১ হাজার ভারতীয়। ভিসা বাতিলের এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারতীয় শিক্ষার্থীরাও সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।

মার্কো রুবিওর ‘ক্যাচ অ্যান্ড রিভোক’ উদ্যোগ

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সাম্প্রতিক সময়ে ‘ক্যাচ অ্যান্ড রিভোক’ নামে একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-চালিত উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এর আওতায় গত তিন সপ্তাহে ৩০০-এর বেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ১.৫ মিলিয়ন শিক্ষার্থী ভিসাধারী রয়েছেন, যা এই সিদ্ধান্তের কারণে ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।

ই-মেইলে শিক্ষার্থীদের কী জানানো হয়েছে?

শিক্ষার্থীদের পাঠানো ই-মেইলে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র দপ্তরের কনস্যুলার অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো ভিসা অফিস তাদের ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ, ভিসা ইস্যু হওয়ার পর তাদের কার্যক্রমের অতিরিক্ত তথ্য পাওয়া গেছে, যা মার্কিন অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

ই-মেইলে আরও উল্লেখ করা হয়েছে,

  • শিক্ষার্থীদের স্কুল কর্তৃপক্ষকে তাদের ভিসা বাতিলের বিষয়ে অবহিত করা হতে পারে।
  • অবৈধ অভিবাসন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করলে জরিমানা, আটক বা নির্বাসনের সম্মুখীন হতে হতে পারে।
  • এই বাতিলকরণ ভবিষ্যতে মার্কিন ভিসা পাওয়ার যোগ্যতাকেও বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
  • শিক্ষার্থীদের ‘CBP হোম অ্যাপ’ ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের পরিকল্পনা করতে বলা হয়েছে এবং তাদের পাসপোর্ট মার্কিন দূতাবাসে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়া পর্যালোচনা বাধ্যতামূলক

মার্কো রুবিওর ২৫ মার্চের নির্দেশিকা অনুযায়ী, শিক্ষার্থী এবং নতুন ভিসা আবেদনকারীদের সোশ্যাল মিডিয়া পর্যালোচনা এখন বাধ্যতামূলক। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, যদি কোনো শিক্ষার্থীর সোশ্যাল মিডিয়া কার্যক্রমে অবমাননাকর তথ্য পাওয়া যায়, তবে সেটিকে ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ করা হবে। The Newyork Times