‘ভারতের সংসদ ভবনও ওয়াকফ সম্পত্তি!’
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: লোকসভায় ওয়াকফ সংশোধনী বিল পেশ করেছেন সংখ্যালঘু কল্যাণ মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। বিলটি উত্থাপন করে তিনি বলেন, এই সংশোধনী আনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ ২০১৩ সালে নেওয়া কিছু পদক্ষেপের ফলে আজ সংসদ ভবনও ওয়াকফ সম্পত্তি হয়ে যেতে পারত। বসন্ত কুঞ্জ, দিল্লি বিমানবন্দর সহ মোট ১২৩টি জায়গা নিজেদের বলে দাবি করে ওয়াকফ বোর্ড। এই মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক চর্চা শুরু হয়েছে।
ওয়াকফ সংশোধনী বিলের প্রয়োজনীয়তা
মন্ত্রী কিরেন রিজিজু জানান, ১৯৭০ সাল থেকে ওয়াকফ বোর্ড সংসদ ভবন-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানের ওপর দাবি করে আসছিল। ২০১৩ সালে এই স্থানগুলিকে ডিনোটিফাই করা হয়েছিল, তবে সেই সিদ্ধান্তের কিছু জটিলতা রয়ে গিয়েছিল। এর ফলে বর্তমান সরকার মনে করে, ওয়াকফ আইন সংশোধন করা আবশ্যক।
তিনি আরও জানান, ওয়াকফ আইনের ১০৮ ধারায় বলা হয়েছে যে ওয়াকফ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত যে কোনও প্রচলিত আইনের ঊর্ধ্বে হবে। এ কারণে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থানের মালিকানা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। সেই সমস্যাগুলি সমাধানের জন্যই নতুন সংশোধনী আনা হয়েছে।
বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া ও সরকারের অবস্থান
বিরোধী দলগুলি এই সংশোধনী বিলের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং অভিযোগ করেছে যে এটি মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে পারে। তবে, মন্ত্রী রিজিজু স্পষ্টভাবে বলেছেন, এই সংশোধনীতে এমন কোনও বিধান নেই যা মুসলমানদের ধর্মীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে। তিনি আরও বলেন, ওয়াকফ বোর্ড শুধুমাত্র জমির তত্ত্বাবধান করে, তার মালিকানা নয়। সুতরাং, এই সংশোধনীর মাধ্যমে মুসলমানদের অধিকার বা ধর্মীয় প্রথার ওপর কোনও প্রভাব পড়বে না।
সংশোধনী আনার আগে মতামত গ্রহণ
মন্ত্রী দাবি করেন, বিলটি আনার আগে ৯৭ লক্ষেরও বেশি মানুষের মতামত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, ২৫টি রাজ্যের ওয়াকফ বোর্ডের পরামর্শ বিবেচনা করা হয়েছে। অতীতে, ১৯৫৪ সালে প্রথমবার ওয়াকফ বোর্ড আইন প্রণয়ন করা হয় এবং ১৯৯৫ সালে এতে বড় পরিবর্তন আনা হয়। সেই সময় এই সংশোধনীগুলি নিয়ে কোনও বিতর্ক তৈরি হয়নি, কিন্তু বর্তমান সংশোধনী নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।
সম্পত্তি সংক্রান্ত জটিলতা দূর করতেই এই আইন
ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক চললেও সরকার স্পষ্ট করেছে যে এটি কোনও সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয়, বরং সম্পত্তি সংক্রান্ত জটিলতা দূর করতেই আনা হয়েছে।