পাকিস্তানে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে খতম ভারত বিরোধী মৌলবাদী মুফতি শাহ মীর
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: পাকিস্তানের বালুচিস্তানের তুরবাতে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে খতম মুফতি শাহ মীর, যিনি দেশটির অন্যতম কট্টর ধর্মগুরু হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখতেন এবং ২০১৬ সালে ভারতীয় নৌসেনার প্রাক্তন অফিসার কুলভূষণ যাদবকে অপহরণে সহায়তার অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন।
কীভাবে হত্যা করা হলো মুফতি শাহ মীরকে?
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার আজিজ মসজিদে নামাজের পর বেরোনোর মুহূর্তে বন্দুকধারীরা মুফতিকে গুলি করে হত্যা করে।
- একজন বন্দুকধারী মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে মুফতিকে টার্গেট করে গুলি চালায়।
- ঘটনাস্থলেই তিনি গুরুতর আহত হন, পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
- জেলা পুলিশ কর্তা রশিদ-উর-রহমান জেহরি জানিয়েছেন, হত্যার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং এর পেছনে কারা রয়েছে, তা খুঁজে বের করতে গোয়েন্দারা মাঠে নেমেছে।
কুলভূষণ যাদব অপহরণ ও মুফতি শাহ মীরের ভূমিকা
২০১৬ সালের ৩ মার্চ পাকিস্তান গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ভারতীয় নৌসেনার অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কুলভূষণ যাদবকে গ্রেপ্তার করে।
- ভারতের দাবি, কুলভূষণকে ইরান থেকে অপহরণ করে পাকিস্তানে আনা হয়েছিল।
- পাকিস্তান অভিযোগ করেছিল, তিনি বালুচিস্তানে বিদ্রোহীদের মদত দিচ্ছিলেন।
- তবে ভারত আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে (ICJ) দাবি করেছিল, এটি সম্পূর্ণ সাজানো ঘটনা।
- তদন্তে বেরিয়ে আসে, মুফতি শাহ মীর এই অপহরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং আইএসআই-এর হয়ে কাজ করতেন।
মানব পাচার ও অস্ত্র চোরাচালানে যুক্ত ছিলেন মুফতি?
তদন্তে জানা গেছে, মুফতি শাহ মীর শুধু ধর্মগুরুই ছিলেন না, তিনি মানব পাচার, মাদক এবং অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন।
- তিনি পাকিস্তানের মৌলবাদী রাজনৈতিক দল জামিয়াত উলেমা-ই-ইসলাম (জেআইইউ-এফ)-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখেছিলেন।
- বালুচিস্তান ও আফগানিস্তানে আইএসআইয়ের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তিও করতেন।
- বিশেষ করে বালুচ বিদ্রোহীদের দমন ও সেনাকে তথ্য সরবরাহের কাজে যুক্ত ছিলেন।
হত্যার পেছনে কারা? উঠছে প্রশ্ন
মুফতি শাহ মীরের হত্যাকাণ্ড পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও গোয়েন্দা মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
- বালুচ বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সক্রিয় থাকার কারণে তার হত্যার পেছনে বিদ্রোহীদের হাত থাকতে পারে।
- আইএসআই বা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণেও তিনি টার্গেট হতে পারেন।
- এছাড়া, অপরাধ জগতের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে প্রতিদ্বন্দ্বী চক্রও এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।
মুফতি শাহ মীরের হত্যাকাণ্ড পাকিস্তানের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর জন্য বড় ধাক্কা।
- একদিকে তিনি ধর্মীয় নেতা ছিলেন, অন্যদিকে চোরাচালান, গুপ্তচরবৃত্তি ও সন্ত্রাসবাদে যুক্ত ছিলেন।
- তার মৃত্যুর সঙ্গে আইএসআইয়ের গোপন কার্যকলাপের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, তা এখন তদন্তের বিষয়।
- পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই হত্যাকাণ্ড বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।