Saturday, May 24, 2025
Latestআন্তর্জাতিক

অপারেশন সিঁদুরে মাসুদ আজাহারের পরিবারের ১০ সদস্য এবং ৪ জন সহযোগী নিহত হয়েছেন

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ভারতীয় সেনার ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর অংশ হিসেবে পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরে চালানো হামলায় জইশ-ই-মহম্মদের (জেইএম) প্রধান মাসুদ আজহারের পরিবারের ১৪ জন সদস্য ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি উর্দু। পহেলগামে ২৬ জন পর্যটকের হত্যার প্রতিবাদে ভারত এই হামলা চালায়।

লক্ষ্যবস্তু: জইশ, লস্কর ও হিজবুলের ঘাঁটি

মঙ্গলবার রাত ১টা ৫ মিনিট নাগাদ ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে অবস্থিত জইশ, লস্কর-ই-তৈয়বা ও হিজবুল মুজাহিদিনের ৯টি জঙ্গিঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এই হামলার মূল লক্ষ্য ছিল জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ধ্বংস করা। বাহাওয়ালপুরের সুবহানআল্লাহ কমপ্লেক্স ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুইটি লক্ষ্যবস্তুর একটি। ১৮ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই ঘাঁটিটি ‘উসমান-ও-আলি ক্যাম্পাস’ নামেও পরিচিত, যেখানে নিয়োগ, তহবিল সংগ্রহ ও ধর্মীয় চরমপন্থা ছড়ানোর কাজ চলত।

জইশ প্রধানের স্বীকারোক্তি

বিবিসি উর্দুর তথ্য অনুযায়ী, মাসুদ আজহার এক বিবৃতিতে স্বীকার করেছেন যে ভারতীয় হামলায় তার বড় বোন, দুলাভাই, দুই ভাগ্নে ও তাদের স্ত্রী ও ৫ শিশু সন্তান নিহত হয়েছে। এছাড়াও আজহারের মায়ের এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও আরও দুই গুরুত্বপূর্ণ সহযোগীও প্রাণ হারিয়েছেন।

রউফ আসগরের অবস্থা গুরুতর

হামলায় গুরুতর আহত হয়েছে আজহারের ভাইপো রউফ আসগর, যাকে দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি খুঁজছে। তার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে নির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি, তবে সূত্র বলছে, তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ভারতের প্রতিক্রিয়া: সুনির্দিষ্ট জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্যবস্তু

হামলার পর ভারত সরকার স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়, এটি ছিল কেবলমাত্র নির্দিষ্ট সন্ত্রাসী ঘাঁটির বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ। কোনও পাক সেনা ঘাঁটি বা সাধারণ নাগরিক লক্ষ্যবস্তু ছিল না। ভারতীয় সেনার তরফ থেকে জানানো হয়, এই অপারেশন আন্তর্জাতিক আইনের সীমার মধ্যেই থেকে পরিচালিত হয়েছে।

চূড়ান্ত বার্তা

বাহাওয়ালপুর, পাকিস্তানের ১২তম বৃহত্তম শহর এবং লাহোর থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ভিডিওতে দেখা গেছে, সুবহানআল্লাহ কমপ্লেক্স এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত। মসজিদ এলাকায় ছড়িয়ে রয়েছে ধ্বংসাবশেষ এবং ফাঁকা জায়গা — যা এই হামলার অভিঘাতের প্রমাণ বহন করে।

‘অপারেশন সিঁদুর’ ভারতের জঙ্গি দমনের কৌশলগত পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। চরমপন্থীদের বার্তা দেওয়া হয়েছে— সন্ত্রাসের জবাব কঠোর ভাবেই দেওয়া হবে।