অনুমতি দেয়নি কর্তৃপক্ষ, পড়ুয়াদের একাংশ বলছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে রামনবমী পালন করবোই
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে রামনবমী পালন নিয়ে ফের উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ক্যাম্পাসে রামনবমী পালন করার কোনও অনুমতি দেওয়া হবে না। পূর্বে এই ধরনের অনুমতির রীতি না থাকায় এবারও সিদ্ধান্তে কোনও পরিবর্তন আনা হচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে। যদিও এই অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ করে একদল পড়ুয়া ঘোষণা করেছে, তারা অনুমতি না পেলেও রবিবার সকাল ১১টায় ক্যাম্পাসের ৩ নম্বর গেটের কাছে রামনবমী পালন করবেন।
সূত্র অনুযায়ী, গত ২৮ মার্চ ‘সাধারণ ছাত্রছাত্রী’দের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে একটি লিখিত আবেদনপত্র জমা দেওয়া হয় রামনবমী পালনের অনুমতির জন্য। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকরা আলোচনা করে লিখিতভাবে জানিয়ে দেন, অনুমতি দেওয়া যাচ্ছে না। প্রথম চিঠিতে কর্তৃপক্ষের কোনও স্বাক্ষর না থাকায় ফের একদিন পর, স্বাক্ষরিত চিঠি আবেদনকারীদের পাঠানো হয়। চিঠিতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য না থাকায় এই বিষয়ে নতুন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। সেই সঙ্গে অন্যান্য প্রশাসনিক কারণও তুলে ধরা হয়েছে।
যদিও ছাত্রদের একাংশ এই সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট। পড়ুয়া সোমসূর্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “গত বছর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু পরে অস্বীকার করা হয়। এ বছর তো অনুমতিই দেওয়া হল না। অথচ অন্যান্য ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ক্যাম্পাসে পালিত হয়। তাহলে রামনবমী কেন নয়? এটা কি দেশের বাইরে? আমরা রামনবমী পালন করবই, কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, “আমরা লিখিতভাবে আমাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি। নিরাপত্তারক্ষীদেরও সতর্ক করা হয়েছে। ছুটির দিনে ক্যাম্পাসে কে কী করছেন, তা নজরে রাখা কঠিন হলেও পুলিশ প্রশাসনকে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।”
প্রসঙ্গত, গত বছরও রামনবমী পালন ঘিরে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। অভিযোগ, তখনও প্রথমে অনুমতি দিলেও পরে তা প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এবার সেই ঘটনারই যেন পুনরাবৃত্তি।
এই পরিস্থিতিতে রামনবমীর দিন যাদবপুর চত্বরে আরও উত্তেজনা ছড়ানোর আশঙ্কা থাকছে। বিভিন্ন হিন্দু সংগঠনের পক্ষ থেকেও একাধিক কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং হিন্দু জাগরণ মঞ্চ সহ একাধিক সংগঠনের মিছিল যাদবপুর অভিমুখে আসবে বলেও জানা গেছে। ফলে রামনবমী ঘিরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা প্রশাসনের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে।
চলমান পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব পাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের কাঁধে এখন দায়িত্ব—কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়, যাতে শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ অশান্ত না হয়।