‘রামনবমীতে বাইরে থেকে লোক এনে অশান্তি পাকাতে পারে বিজেপি’, আশঙ্কা ফিরহাদের
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গে রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে অশান্তির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কলকাতার মেয়র এবং রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি সরাসরি বিজেপিকে দায়ী করে বলেছেন, বিরোধী দল পরিকল্পিতভাবে রাজ্যে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। এমনকি, ভিনরাজ্য থেকে লোক এনে বাংলার শান্তি নষ্ট করার চক্রান্ত করছে বলেও তিনি দাবি করেন।
মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য
ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ বসবাস করেন। তাঁদের মধ্যে কিছু ব্যক্তি অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেন। তবে, আমরা তাঁদের চিহ্নিত করতে পারলেই সমস্যা তৈরি হবে না।”
তিনি আরও জানান, রামনবমীর রাতে তিনি এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের পরিস্থিতির উপর নজর রাখেন। সরকারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হচ্ছে যাতে কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
বিজেপির হিন্দুত্বের রাজনীতি
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৬ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গে ধর্মীয় মেরুকরণ এবং কট্টর হিন্দুত্বের রাজনীতিকে সামনে রেখে বিজেপি শক্তি প্রদর্শন করতে চাইছে। বিজেপি নেতারা রামনবমীর দিন অস্ত্র হাতে মিছিলের পরিকল্পনার ইঙ্গিত দিয়েছেন। শুভেন্দু অধিকারী ও দিলীপ ঘোষের মতো নেতারা দলীয় কর্মীদের ‘প্রস্তুত’ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন হওয়া উচিত। এটা আমার ব্যক্তিগত মত।” অপরদিকে দিলীপ ঘোষ বলেন, “রামনবমীতে শক্তি প্রদর্শনের জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।”
পুলিশ প্রশাসনের অবস্থান
রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, রামনবমীতে অস্ত্র হাতে মিছিল করা যাবে না। এই বিষয়ে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) পূর্ব ক্ষেত্রের সহ-প্রচার প্রধান ড. জিষ্ণু বসু বলেন, “দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় রীতিনীতিতে পার্থক্য থাকে। তবে পুলিশ যদি মনে করে অস্ত্র হাতে মিছিল করা যাবে না, সেটি তাদের সিদ্ধান্ত।”
বাংলায় সাম্প্রদায়িক রাজনীতি চলে না
ফিরহাদ হাকিমের মতে, “রামনবমীতে কিছুই হবে না। বাংলার মানুষ রামকৃষ্ণের ‘যত মত, তত পথ’ দর্শনে বিশ্বাসী। বাংলায় সাম্প্রদায়িক রাজনীতি চলে না।” সরকার পরিস্থিতি শান্ত রাখতে সবরকম ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবার কাছে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।