Thursday, April 25, 2024
আন্তর্জাতিক

মুসলিম বিদ্বেষী প্রচারণা রি-টুইট করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

ব্রিটেনের চরম ডানপন্থী একটি দলের তিনটি উস্কানিমূলক মুসলিম বিদ্বেষী ভিডিও ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে টুইট করেছেন।ব্রিটেন ফার্স্ট নামে দলটির উপনেতা জেইডা ফ্রানসেনের প্রথম টুইট বার্তায় এক ভিডিওতে দাবি করা হয় একজন মুসলিম অভিবাসী ক্রাচ নিয়ে চলা এক প্রতিবন্ধীর ওপর হামলা করেছে। এরপর তিনি আরও দুই ব্যক্তির একই ধরনের দু’টি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করেন তারাও মুসলমান। এর একটিতে দেখানো হয় মুসলিমরা একটি খ্রিস্টান মূর্তি ভাঙছে আর অন্যটিতে তারা এক বালককে হত্যা করছে।

এই তিনটি ভিডিও ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে টুইটারে শেয়ার করেন। ব্রিটিশ ফার্স্ট দলটি গঠিত হয়েছিল ২০১১ সালে। উগ্র ডানপন্থী ব্রিটিশ ন্যাশানাল পার্টির (বিএনপি) সাবেক সদস্যরা এই দলটি গঠন করে। ”যুক্তরাজ্যের ইসলামীকরণ” উল্লেখ করে দলটি বিতর্কিত বিভিন্ন পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়ে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ইউরোপের নির্বাচন ও উপ নির্বাচনে দলটি অতীতে প্রার্থী দিয়েছে এবং প্রচারণা চালিয়েছে অভিবাসন বিরোধী এবং গর্ভপাত বিরোধী নীতিমালার পক্ষে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত দলটির প্রার্থীরা কোন আসনে জয়ী হতে পারে নি। সর্বসাম্প্রতিক মেয়র নির্বাচনেও দলটি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে এবং ১.২% ভোট পেয়েছে। মিস ফ্রানসেনকে টুইটে অনুসরণ করে ৫২ হাজার লোক। মূল ভিডিওটি প্রথমে শেয়ার করেন আমেরিকার রক্ষণশীল একজন ভাষ্যকার অ্যান কুলটার যাকে ফলো করেন মি: ট্রাম্প।

টুইটার থেকে সতর্ক করে দেয়া হয় যে এই টুইটে স্পর্শকাতর বিষয়বস্তু রয়েছে

মি: ট্রাম্প এই টুইট শেয়ার করার পর মিস ফ্রানসেন খুবই উৎসাহের সঙ্গে তার উত্তর দেন। তার অ্যাকাউন্টে মিস ফ্রানসেন লেখেন : ”এই ভিডিওগুলো ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজে নতুন করে আবার টুইট করেছেন এবং তার ফলোয়ারের সংখ্যা প্রায় চার কোটি ৪০ লক্ষ।” ”ট্রাম্প ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুন! ঈশ্বর আমেরিকার মঙ্গল করুন!” তিনি লেখেন। এই বার্তাটি ব্রিটেন ফার্স্টের টুইটার অ্যাকাউন্টেও শেয়ার করা হয়।

টুইটারে জেইডা ফ্রানসেনের ফলোয়ারের সংখ্যা ৫২ হাজার

এ মাসের গোড়ার দিকে বেলফাস্টে দেওয়া এক ভাষণে হুমকি দেওয়া, এবং অপমানকর ভাষা ব্যবহার এবং আচরণের জন্য মিস ফ্রানসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। ১৪ই ডিসেম্বর বেলফাস্ট ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তাকে হাজির হতে বলা হয়েছে।

তার উস্কানিমূলক ভিডিওগুলো মি: ট্রাম্প আবার নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হতাশা প্রকাশ করা হয়েছে। ব্রিটিশ সংসদ সদস্য জো কক্সকে চরম দক্ষিণপন্থী এক ব্যক্তি হত্যা করে এবং হত্যার আগের মুহূর্তে ”ব্রিটেন ফার্স্ট” বলে ধ্বনি দেয়। জো কক্সের স্বামী ব্রেনডান কক্স মি: ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছেন।

টিভি উপস্থাপক ও সাংবাদিক পিয়ের্স মরগ্যান যিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ”বন্ধু” বলে অভিহিত করেন তিনি এক টুইট বার্তায় বলেছেন : ”আপনি এটা কি কাণ্ড করছেন?” ”আপনার এই পাগলামো বন্ধ করুন এবং নতুন টুইটবার্তাগুলো সরিয়ে ফেলুন,” তিনি বলেন।

ব্রিটেনের মুসলিম কাউন্সিল ব্রিটিশ সরকারকে এসব মন্তব্য থেকে দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে। ”আমেরিকান প্রেসিডেন্ট তার উগ্র ডানপন্থী মতাদর্শ ও বিষাক্ত মুসলমান বিরোধী প্রচারণাকে যে স্পষ্টভাবে অনুমোদন করেন এটা তারই প্রমাণ,” কাউন্সিলের মুখপাত্র বলেন।

বিষয়টি ব্রিটেনের সংসদে উত্থাপন করা হয় এবং বিরোধী লেবার এমপি ইভেট কুপার মি: ট্রাম্পের পদক্ষেপকে নিন্দা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। বিবিসি