পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা কান্ডে পাকিস্তানকে সমর্থন, অসমে গ্রেফতার এআইইউডিএফ বিধায়ক আমিনুল ইসলাম
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনায় শোকের ছায়া দেশজুড়ে। এর মধ্যেই পাকিস্তানকে পরোক্ষভাবে সমর্থন জানিয়ে বিপাকে পড়লেন অসমের বিরোধী দল এআইইউডিএফ-এর বিধায়ক আমিনুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার বিকেলে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে তাকে তার নগাঁওয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
২৩ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার পরদিনই এক জনসভায় দেওয়া আমিনুল ইসলাম বিতর্কিত বক্তব্য রাখেন। সভায় তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি যে, ২০১৮ সালে পুলওয়ামায় সন্ত্রাসবাদী হামলায় বিজেপি সরকার যুক্ত ছিল। সেবার ৪০ জন বিএসএফ জওয়ানের মৃত্যু হয়েছিল। ২০১৯ সালে বিজেপি মেরুকরণ করে ভোটে জিতেছিল। এই পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার নেপথ্যেও নরেন্দ্র মোদী সরকারের চক্রান্ত রয়েছে।” এছাড়া তিনি দাবি করেন, সরকার সত্য উদঘাটনে ব্যর্থ হলে ধরে নিতে হবে এই হামলার পিছনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ষড়যন্ত্র রয়েছে।
এই বক্তব্যের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া। বিজেপি শাসিত অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এই বিষয়ে কড়া অবস্থান গ্রহণ করে সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “আমি অসম পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি, কেউ যদি পাকিস্তানকে সমর্থন করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে। বিধায়ক আমিনুল ইসলাম যা বলেছেন, তাতে অসমবাসী ক্ষুব্ধ। কাউকে রেয়াত করা হবে না।”
ইতিমধ্যে আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে নগাঁও সদর থানায় মামলা রুজু হয়েছে। নগাঁওয়ের এসপি স্বপ্ননীল দেকা জানান, “বিধায়ক আমিনুল ইসলামকে জেরা করা হবে। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। তাকে নগাঁও থানায় হাজির করা হয়েছে।”
তবে এই ঘটনার জেরে নিজ দলের বিধায়কের থেকে দূরত্ব তৈরি করেছে এআইইউডিএফ নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আমিনুল ইসলামের মন্তব্য দলীয় অবস্থান নয় এবং দলের ভাবমূর্তির স্বার্থে এ বিষয়ে শীঘ্রই আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হবে।
দেশের নিরাপত্তা নিয়ে এমন সংবেদনশীল মুহূর্তে এক জননির্বাচিত প্রতিনিধি’র এই ধরনের মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছড়িয়েছে। রাজনীতিতে মতভেদ থাকলেও, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে এমন বক্তব্য কতটা গ্রহণযোগ্য — তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে।