বিদেশী অতিথি নয়, প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে আমন্ত্রিত ছিলেন ৫৬৫ জন নির্মাণ শ্রমিক, সাফাই কর্মী, অটোরিকশা চালক, স্বাস্থ্যকর্মী

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: রাজপথে অনুষ্ঠিত ৭৩ তম প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে কোনও বিদেশী প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন না। দেশের বিভিন্ন পেশার ৫৬৫ জন বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন। এর মধ্যে ঝাড়ুদার থেকে শুরু করে নার্স এবং অটো চালকও ছিলেন। বিশেষ আমন্ত্রিতদের মধ্যে ২৫০ জন নির্মাণ শ্রমিক, ১১৫ জন সাফাই কর্মী, ১০০ জন অটোরিকশা চালক এবং ১০০ জন স্বাস্থ্যকর্মী অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক ঊর্ধ্বতন আধিকারিক বলেছেন, যারা কখনও প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপন দেখার সুযোগ পাননি তাঁদের সুযোগ দেওয়ার জন্য বিশেষ প্রচেষ্টা করা হয়েছে। এ বছর সর্বস্তরের মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ওই আধিকারিক বলেন, তাদের কাজকে স্বীকৃতি দেওয়া সরকারের পক্ষ থেকে একটি দুর্দান্ত পদক্ষেপ। অতিমারির মধ্যে দুটি প্রজাতন্ত্র দিবসের আয়োজন করা একটি কঠিন কাজ ছিল। কিন্তু আমরা শেষ পর্যন্ত সেটা করতে পেরেছি।

৫২ বছর বয়সী অশোক কুমার ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে নিউ দিল্লি মিউনিসিপ্যাল ​​কাউন্সিলের (এনডিএমসি) সাফাই কর্মচারি হিসাবে কাজ করছেন। গাজিয়াবাদে তাঁর স্ত্রী ও তিন সন্তানের সঙ্গে থাকেন অশোক কুমার। প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ তিনি আগে কখনও দেখেননি।

অশোক কুমার বলেন, আমরা করোনাকালীন সময়ে কঠোর পরিশ্রম করেছি। আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি। আমরা অবিরাম কাজ করে পরিষ্কার রেখেছি।

পশ্চিমবঙ্গের মালদা থেকে আমন্ত্রিত ছিলেন অক্ষয় তাঁতি। যিনি নয়াদিল্লিতে সেন্ট্রাল ভিস্তা নির্মাণ সাইটে হেলপার হিসেবে কাজ করেন। তিনি বলেন, আমি এখন প্রায় ৫০ দিন ধরে সাইটে কাজ করছি। এর আগে, আমি একটি ভিন্ন কোম্পানির সাথে ভাদোদরায় কাজ করছিলাম। কোনও কাজ ছাড়াই তিনি মালদায় বাড়িতে প্রথম লকডাউন কাটিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, আমাদের বাইরে যেতে দেওয়া হয়নি। কখনও কখনও কাজ এবং খাবার ছিল, এবং কখনও কখনও ছিল না। বৃষ্টি হলে কাজ পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়তো। তিনি সাইটে কাজ করেন, যখন প্রয়োজন হয় তখন পরিষ্কার করেন। পশ্চিমবঙ্গে বাড়িতে তাঁর দুই সন্তান আছে।

৩৬ বছর বয়সী রেনু নগর বলেন, তিনি দ্য ট্রেন্ড নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার সাথে যুক্ত। তিনি বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় করোনা ঢেউয়ের সময় পিপিই কিটের ব্যাপক ঘাটতি ছিল। এর চাহিদা মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছিল। 

৪২ বছর বয়সী সংঘমিত্রা সাওয়ান্ত ভারতের প্রশিক্ষিত নার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহকারী সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, গত দুই বছর নার্সদের জন্য কঠিন ছিল। তিনি বলেন, মহামারির সময় তাকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এ সময় চাকরিতে অস্থিরতা থাকে। পরিবার থেকে দূরে থাকতে হয়েছে নার্সদের। তাকে মানসিক সমস্যা মোকাবেলা করতে হয়েছে। আমরা চাই নার্সরা তাদের প্রচেষ্টার জন্য স্বীকৃতি দেওয়া হোক। এই ধরনের কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ পাওয়া তাঁদের কাছে সৌভাগ্যের বিষয়।