Saturday, May 24, 2025
Latestদেশ

কেরলে মাথা মুড়িয়ে আশা কর্মীদের প্রতিবাদ, নায্য বেতনের দাবিতে ৫০ দিনের লড়াই

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: কেরলে ন্যায্য পারিশ্রমিক ও সম্মানের দাবিতে আন্দোলনরত আশা কর্মীরা সোমবার অভিনব এক প্রতিবাদ জানালেন—মাথা মুড়িয়ে সরকারের প্রতি তাঁদের ক্ষোভ উগরে দিলেন। আন্দোলনের ৫০তম দিনে যখন তাঁদের দাবি উপেক্ষিত থেকে যায়, তখন চরম পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হন তাঁরা। প্রতিবাদে সামিল হয়ে পুরুষ আন্দোলনকারীরাও একইভাবে মাথা মুড়িয়ে সংহতি জানান।

প্রতিবাদের কারণ ও প্রেক্ষাপট

আশা কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরেই তাঁদের ন্যায্য বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। বর্তমানে তাঁদের দৈনিক পারিশ্রমিক মাত্র ২৩২ টাকা, যা বর্তমান মূল্যস্ফীতির বাজারে টিকে থাকার জন্য অত্যন্ত অপ্রতুল। আন্দোলনকারীরা সরকারের নিরবতা ও অবজ্ঞার বিরুদ্ধে বারবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে ৫০ দিনের লাগাতার আন্দোলন সত্ত্বেও তাঁদের দাবি মানা হয়নি। ফলে সোমবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হয়ে তাঁরা মাথার চুল কেটে ফেলে প্রতিবাদ জানান।

আন্দোলনের প্রতিক্রিয়া

এক আন্দোলনকারী বলেন, “আমাদের জীবনই কেটে ফেলা হচ্ছে। মন্ত্রীদের কাছে আমাদের দুঃখ-কষ্টের কোনও মূল্য নেই। মাত্র ২৩২ টাকা দৈনিক ভাতা দিয়ে আমরা কীভাবে সংসার চালাব?” আন্দোলনের অন্যতম নেতা মিনি এস. বলেন, “এটা শুধুমাত্র আবেগের বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের দৃঢ় প্রতিবাদ।” তিনি হুঁশিয়ারি দেন যে এই আন্দোলন রাজ্যজুড়ে আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে।

সরকারি প্রতিক্রিয়া ও কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্ব

কেরল রাজ্য সরকারের দাবি, আশা কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকার পাল্টা দাবি করেছে যে কেরল সরকার যথাযথ হিসাব সংক্রান্ত নথি জমা না দেওয়ায় কেন্দ্রীয় সহায়তার অর্থ আটকে রয়েছে। সংসদে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জে.পি. নাড্ডা ঘোষণা করেন যে, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের (এনএইচএম) মিশন স্টিয়ারিং গ্রুপ আশা কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু কবে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

প্রতিবাদের ভবিষ্যৎ

এই প্রতিবাদ কর্মসূচি নতুন মাত্রা পেয়েছে, যা বাংলার চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের কথা মনে করিয়ে দেয়। ধর্মতলায় চাকরির দাবিতে আন্দোলনরত যুবক-যুবতীরাও এক সময় মাথা মুড়িয়ে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। কেরলে আশা কর্মীদের এই প্রতিবাদ কতদূর গড়াবে এবং সরকার আদৌ তাঁদের দাবি মেনে নেবে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।